নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা সম্বলিত বিলবোর্ড (ফেস্টুন) লাগানোকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র দুপক্ষের একপক্ষের নেতার বাড়িতে হামলা করে ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন প্রতিপক্ষের লোকজন। এসময় শফিকুল ইসলাম শফিক (৪০) নামে এক করাতকল শ্রমিক নিহত ও কমপক্ষে ছয়জন আহতের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই খাইরুল ইসলাম বাদীয় হয়ে বেআইনী জনতাবদ্ধে বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ, হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে সাধারণ ও গুরুতর জখম, হত্যা, তিন লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন এবং হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের অপরাধে বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় দুর্গাপুর উপজেলা মাঝিয়াইল গ্রামের ইমাম হাসান ওরফে আবু চাঁনে ছেলে ও উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক জামাল উদ্দিন মাস্টারকে (৫০) প্রধান আসামিসহ ২৮ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো ৮০-৯০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) দুপুর ২টার দিক মামলাটি থানায় নথিভুক্ত করা হয়। এর আগের দিন (শুক্রবার) রাতে মামলার এজাহারনামীয় ১৬ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। গ্রেফতারকৃত তাজুল ইসলাম (৪৫) দুর্গাপুরের মার্কাস মোড় এলাকার আমজত হোসেনের ছেলে।
মামলা রুজু ও গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে দুর্গাপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আজ (শনিবার) গ্রেফতারকৃত তাজুল ইসলামকে জেলা আদালতে প্রেরণ করা হয়। পরে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বাকলজোড়া এলাকার সন্তান এবং দুর্গাপুরে ডিগ্রীর কলেজের সাবেক শিক্ষক ও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. হামিদুর রহমান রাশেদ আগামী ঈদুল আযহা উপলক্ষে দুর্গাপুর ও উপজেলার আশপাশের বেশকিছু এলাকায় ঈদ শুভেচ্ছার বিলবোর্ড টানানোর জন্য এলাকায় প্রেরণ করেন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এসব বিলবোর্ড দুর্গাপুর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় লাগাতে গেলে উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক জামাল উদ্দিন মাস্টার বাঁধা দেন এবং হামিদুর রহমান রাশেদের লোকজনকে বিএনপি অফিসে নিয়ে যা। সেখানে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিলবোর্ড রেখে দেন জামাল মাস্টার।
একই দিন রাত ৭টার থেকে সাড়ে ৮টার দিকে এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাত ৮০-৯০ জন পূর্বপরিকল্পিতভাবে একযোগে হয়ে মোটরসাইকেল-পিকআপ যোগে দা, রামদা, ছোরা, হকিস্টিক, রড, আগ্নেয়াস্ত্রসহ ড. হামিদুর রহমান রাশেদের বাড়িতে হামলা করে এবং আগ্নেয়াস্ত্রসহ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়াসহ অস্ত্রের মহড়া দেখিয়ে ভয়ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করে। তাদের সাথে থাকা অস্ত্রাদি দিয়ে বাড়ি-ঘর কুপিয়ে ও বাইরাইয়া দরজা, জানালা, বেড়া, ঘর ভেঙে অনুমানিক তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করা হয়।
এ সময় হামিদুর রহমান রাশেদের বাড়ির লোকজন শফিকুল ইসলাম শফিক, কালাচান (৪২), লালচান (৪৫), সৌরভ (২২), মানিক মিয়া (৩৮), সবুজ মিয়া (৪৫) ও তাকির আল বাধা নিষেধ দিতে চেষ্টা করেন। এজাহারনামীয় প্রধান আসামি জামাল মাস্টারের সাথে থাকা ছুরি দিয়ে শফিকুল ইসলাম শফিকের নাভির নিচে তলপেটে ডানপার্শ্বে কাটা ছিদ্রযুক্ত জখম করলে শফিক মারা যায়। বাকিদের অনেকে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হয়। মামলার এজাহার থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।