নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে আবুল কালাম (৩০) নামে এক যুবককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বড়ভাই শাহ আলম (৪৫) গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহত ও আহত দুজন সম্পর্কে সহোদর ভাই এবং উপজেলার আইথর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে।
অভিযুক্তরা হলেন- কেন্দুয়ার কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণজাত গ্রামের মৃত আ. হেকিম ফকিরের ছেলে আজিজুল হক (৫০) ও তার ভাতিজা কিরন এবং অজ্ঞাত আরো দুজন।
রবিবার (১৮ মে) কেন্দুয়া থানার ডিউটি অফিসার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, এখনও থানায় কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ঘটনায় এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।
এরআগে গত শনিবার সন্ধ্যার পরে কেন্দুয়া পৌরসভার আইথর এলাকার সেনবাড়ি মোড়ে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মণজাত গ্রামের আজিজুল হক (৫০) ও একই মহল্লার মৃত খুরশিদ মিয়ার ছেলে আ. হান্নান (৫২) গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অংশীদারী জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। তারা পরস্পর মামাতো-ফুফাতো ভাই। নানার বাড়ির সম্পত্তির ওয়ারিশ সূত্রে আজিজুল হক তার মামা মৃত খুরশিদ মিয়ার কাছ থেকে পাওয়া জায়গাটি আবুল কালামের ঘরের পাশে। আজিজুলের জায়গা কালামের কাছে বিক্রয় করার প্রস্তাব দেন। কালামের কাছে টাকা না থাকায় কিছুদিন অপেক্ষা করতে বলেন আজিজুলকে।
এদিকে আজিজুল এক লক্ষ টাকা বায়না নিয়ে কালামের চাচাতো ভাই ও চান মিয়ার ছেলে জজ মিয়ার সাথে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তি করেন। এতে করে কালাম ও জজ মিয়ার মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। বাক বিতন্ডার এ খবর জজ মিয়া আজিজুলকে জানালে ক্ষিপ্ত হন আজিজুল।
গত শনিবার (১৭ মে) বিকেল ৪টার দিকে আজিজুল আইথর গ্রামে এসে কালাম ও তার পরিবারকে উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি কালামের বাড়ির পেছনে একটি লিচু গাছ কেটে ফেলেন এবং গোয়াল ঘরের গরু ছেড়ে দেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং আজিজুল ও তার ভাতিজা কিরন কালামের সাথে তর্কে জড়ান। পরে একই দিন এশার নামাজের সময় সেনবাড়ি মোড়ে আজিজুল, কিরন ও আরও দুজন অজ্ঞাত ব্যক্তি মিলে কালাম ও তার ভাই শাহ আলমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে প্রথমে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে আবুল কালামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে কারণে রাতেই কালামের মৃত্যু হয়।