বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের(ববি) উপাচার্য ড.শুচিতা শরমিনের পদত্যাগ দাবিতে আজ (১২মে) দুপুরের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নীচ তলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী মঞ্চসহ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে কর্মসূচিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ গ্রহণ করেন। অবস্থান কর্মসূচির সময় শিক্ষার্থীরা প্ল্যা কার্ড প্রদর্শন করেন, প্ল্যা কার্ডে ভেসে উঠে,” ১ দফা,১ দাবি, ভিসি তুই এখন যাবি; আমার বোন মরলো কেন, শুচিতা জবাব চাই; ৮ মাস চলে গেল, উন্নয়নের কি হলো?; মামলাবাজ ভিসি, আর নেই দরকার; দুর্নীতিবাজ ভিসি, আর নেই দরকার;।”
একই সময় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন,”ওয়ান ট্রু থ্রি ফোর ফ্যাসিস্ট ভিসি নো মোর; ফ্যাসিবাদের কালো হাত ভাঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও; আমার বোন কবরে, ভিসা কেন চেয়ারে; ইত্যাদি ইত্যাদি।” পরবর্তীতে আন্দোলনকারীরা বলেন,”উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ২৮তম দিনে(১২মে) তারা ব্লকেড কর্মসূচি দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা অভিযোগ করেন, বারবার রাষ্ট্রপক্ষকে জানানোর পরেও কোনো সাড়া মেলেনি।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, যদি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হয়, তার জন্য কর্তৃপক্ষই দায়ী থাকবে। তারা সুস্পষ্ট ভাষায় বলেন, আগামীকাল দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে যদি উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে অপসারণ করা না হয়, তবে তারা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেবেন।” আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী গণিত বিভাগের মো.ফয়সাল বলেন,” অনেক দিন যাবৎ আমাদের এই আন্দোলন, কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান আসেনি। যার ফলে আমাদের আগামীকাল কঠিন কর্মসূচি দিতে এক প্রকার বাধ্যই হচ্ছি।”
আন্দোলন চলাকালীন শিক্ষার্থী সুজয় সুভ বলেন, আমাদের শিক্ষক,শিক্ষার্থী কর্মকর্তা ও কর্মচারী যৌক্তিক আন্দোলন যদি ১:৫৯ মিনিট মধ্যে মেনে না নেওয়া হয়, আগামীকাল ২টা থেকে দক্ষিণবঙ্গ বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। জুলাই আন্দোলনে আহত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো.আরিফুল রহমান অনিক বলেন,”এতো দিন শিক্ষার্থীরা এতোদিন আন্দোলন করার পর সরকার বিষয়টা কর্ণপাত করেনি।
আমরা এই গরমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি সরকার এইসব কি দেখছে না?আমরা স্পষ্ট করে বলতে চায় আমাদের পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে দিন।ভিসি অপসারন করুন তারপর রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত একজন সৎ মানুষকে ভিসি হিসেবে বসান।” কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে কেউই ভালো নেই।
এই ফ্যাসিস্ট মনোভাবের স্বৈরাচারী ভিসি যদি বহাল থাকেন, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে যাবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষার স্বার্থে আমরা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পাশে আছি।” উল্লেখ্য,পূর্বের ঘোষিত কর্মসূচি অনুয়ায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ (১২মে) থেকে অ্যাকাডেমিক শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গ্রুপ থেকে জানা যায় কিছু ডিপার্টমেন্টে পাঠদান কার্যক্রম চালু ছিল।
এবং গত (৬মে) শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক কার্যালয় তালা ঝুলিয়ে দেন। যা এখন পর্যন্ত একই অবস্থায় আছে। ঐ দিন শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পরে উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিজ কার্যালয় থেকে বের হয়ে যান। গত (১০মে) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬ জন শিক্ষক বিবৃতি দেন। বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজমান।