ববি প্রতিনিধি:
তামজিদ হোসেন মজুমদার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এই সময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন,” এক দুই তিন চার ভিসি তুই গদি ছাড়; যে ভিসিরে পাই না, সে ভিসিরে চাই না; স্বৈরাচারের গদিতে, আগুন জ্বালাও এক সাথে; দফা এক দাবি এক, ভিসির পদত্যাগ; স্বৈরাচারের কালো হাত, ভেঙ্গে দাও ঘুরিয়ে দাও।”
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু হয়ে লাইব্রেরির ও টিএসসি রাস্তা হয়ে আবার গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে সমাবেশিত হয় শিক্ষার্থীরা। তখন শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন কর জানান,শিক্ষার্থীরা বলেন, ৬ মাস কেটে গেলেও ২২ দফা বাস্তবায়ন সম্ভব হয় নি। জুলাই আন্দোলনে হামলাকারী শিক্ষার্থীদের শাহরিয়ার শানকে ছাত্রলীগ দরজা ভেঙে নিয়ে গেলেও তাদের নামে কোনো মামলা কিংবা শাস্তির ব্যবস্থা করেনি প্রশাসন, বরং যৌক্তিক আন্দোলন দমন করার জন্য শিক্ষার্থীদের নামে মামলা দিচ্ছেন।
এছাড়াও প্রফেসর ড. শূচিতা শারমিন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে ফ্যাসিস্ট শিক্ষকদের পুনর্বাসন করে চলেছে। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, যদি এ স্বৈরাচার ভিসিকে অপসারণ না করা হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয়সহ গোটা দক্ষিণ বঙ্গ শাটডাউন করে দেওয়া হবে। এখানে এমন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক যেন দক্ষিণ বঙ্গ তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শিক্ষার্থী বান্ধব হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রেদোয়ান ইসলাম বলেন,”আমাদের প্রিয় অভিভাবকের কথা এবং কাজে মিল পাওয়া যায় না।
তিনি নিজেকে শিক্ষার্থীবান্ধব দাবি মনে করলেও, শিক্ষার্থীরাই তার চোখের কাঁটা। সেজন্যই শিক্ষার্থীদের নামে মামলা দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ভান চাল করার চেষ্টা চালিয়েছেন। যার কারণে আমরা তার পদত্যাগ চেয়ে, স্বৈরাচারের হাত থেকে পরিত্রাণের পথ খুঁজছি।” শনিবার (৩রা মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে প্রেস ব্রিফিংয়ে পাঁচ দফা উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো- প্রথম দফা:জিমির আবেদনের বিষয়ে প্রশাসনের অবহেলার দায় স্বীকার করতে হবে ও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য উপাচার্যকে প্রকাশ্যে (গ্রাউন্ড ফ্লোরে) সকল শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় তার জন্য অঙ্গীকারপত্র স্বাক্ষর ও প্রকাশ করতে হবে।
দ্বিতীয় দফা:উপাচার্যের কর্মদিবসগুলোতে নির্ধারিত সময়ে নিজ দপ্তরে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে—অনুপস্থিত থাকলে একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।; তৃতীয় দফা:আর্থিক সহায়তা বিষয়ক আবেদন ৩ কর্মদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে—গৃহীত হলে কিংবা বাতিল হলে তা স্পষ্টভাবে জানাতে হবে এবং এই কাজের জন্য একজন নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে।
চতুর্থ দফা:আর্থিক সহায়তা তহবিলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে—নির্দিষ্ট সময় অন্তর ওয়েবসাইটে এর হিসাব প্রকাশ করতে হবে। পঞ্চম দফা:শিক্ষার্থীরা যাতে উপাচার্যের সাথে কোনো জরুরি বিষয় দেখা করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার না হয় এবং শিক্ষার্থীরা যাতে সহজে উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। উল্লেখ্য, আজ (৪ মে) বলা ১১টাই চলমান আন্দোলনসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে উপাচার্য সংবাদ সম্মেলন করেন।
এই সময় উপাচার্য বলেন, সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে এবং ৭ দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন রেজিস্ট্রার নিয়োগ দেয়া হবে। এছাড়া, শিক্ষার্থীদের নামে যে মামলা ও জিডি রয়েছে তা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।
তবে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মহসিন উদ্দিনের বিষয়ে হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে ফ্যাসিস্ট সরকারের সমর্থক শিক্ষক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করতে ও ব্যবস্থা নিতে এক সদস্য বিশিষ্ট একজন সিন্ডিকেট সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।এবং ক্যানসার আক্রান্ত শিক্ষার্থী জেবুন্নেছা হক জিমির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে উপাচার্য বলেন, ওই শিক্ষার্থীর আর্থিক আবেদনের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে