বিপ্লব হোসেন, ইবি প্রতিনিধি:
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর উদ্যোগে স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন ও বিপ্লবের প্রতীক তরমুজ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ শ্রমিকদের নিয়ে কাম্পাসের ডায়না চত্বরে এ আয়োজন করে তারা। এসময় শ্রমিকদের নিয়ে হাড়ি ভাঙা খেলার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীকে পুরষ্কৃত করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও গ্রীন ফোরামের সেক্রেটারি অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ- সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী, তানভীর মাহমুদ মন্ডল, ইয়াসিরুল কবির সৌরভ, নাহিদ হাসান, সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, ইসমাইল হোসেন রাহাতসহ ক্যাম্পাসের নির্মাণ শ্রমিকরা।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের অন্যতম স্টেক হোল্ডার হলেন শ্রমিক ভাইয়েরা। জুলাই আন্দোলনে আমরা যখন ফ্যাসিবাদের বাহিনী দ্বারা মার খাচ্ছিলাম আমাদের হাসপাতালের নেওয়ার মতো কেউ ছিল না, তখন রিক্সাচালক ভাইয়েরা আমাদের হাসপাতালে যেতে সাহায্য করেছে। তাদের এই ত্যাগ আমরা কখনো ভুলবো না। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে শ্রমিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জুলাই আন্দোলনের পর এই বৈষম্যহীন বাংলাদেশে মালিক-শ্রমিকের মধ্যে কোনো বৈষম্য দেখতে চাই না। মালিক শ্রমিকের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হোক এটা আমাদের প্রত্যাশা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও নিরাপদে কাজ করার সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সাধারণ শ্রমিকদের এক দিনের বেতন দিতে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট আহ্বান জানান।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘শ্রমিক হলো আমাদের উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। তাদের ঘামের মাঝে লুকিয়ে আছে আমাদের উন্নয়ন ও বাংলাদেশের জীবন। পৃথিবী সুন্দর করার ক্ষেত্রে ও শোষিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এই শ্রমিকরাই কাজ করে আসছে। বৈষম্যের মূল জায়গা হলো শ্রমিক এবং মালিক। কিন্ত শ্রমিক এবং মালিকের পার্থক্য আমরা দূর করতে পারলাম না, এটা আমাদের ব্যর্থতা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে শ্রমিকদের আইনি কোন সুরক্ষা নেই। এদেশে ১৪৩টি শ্রমখাত রয়েছে। তবে এদের মধ্যে কেবল মাত্র ৪২টি তে শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ করা আছে। বাকী ১৪১টি শ্রম খাতে শ্রমিকদের মূল্য নির্ধারণ করা নেই। তাই অধিকার আদায় এর ক্ষেত্রে ও আইনি সুরক্ষার ক্ষেত্রে তাদের মাঝে যাতে কোন বৈষম্য না থাকে এটা নিশ্চিত করতে হবে।’