নিজস্ব প্রতিবদেক: বন্ধুর হবু বউকে ধর্ষণের অভিযোগে নেত্রকোনা দুর্গাপুরের ছাত্রদল নেতা (বর্তমানে বহিস্কৃত) মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে (২৫) একমাত্র আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী তরুণী (১৯) নিজে বাদীয় হয়ে এই মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় দুর্গাপুর উপজেলায় চন্ডিগড় গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দুর্গাপুর উপজেলার যুগ্ম-আহবায়ক ছিলেন তিনি।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে দুর্গাপুর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সকালের দিকে প্রথমে নেত্রকোনা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ভুক্তভোগীর জবানবন্দির জন্য এবং একই সাথে মামলার আসামি ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে ধর্ষণ মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়।
ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগে উল্লেখ করেন, জেলা ছাত্রলীগ নেতা আবিদ হাসান মুন্না মিয়া সাথে ভুক্তভোগীর বিবাহের দিন ধার্য হয়। গত ২৮ এপ্রিল বিকালে মুন্নার সাথে তরুণী দুর্গাপুরে ঘুরতে আসেন। একই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে দুর্গাপুরের বিরিশিরি ইউনিয়নের তেলুজিয়া গ্রামে বিরিশিরি রিসোর্টে একটি কক্ষে তারা দুজনে যাত্রিযাপন করেন। পরেরদিন মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেলা ১টার দিকে তরুণীকে কক্ষে রেখে মুন্না রিসোর্টের বাহিরে দোকানে যান। বেলা দেড়টার দিকে ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় রিসোর্টে কক্ষের দরজায় টোকা দেন। মুন্না এসেছে ভেবে দরজা খুলে দেন এবং দরজার সামনে ফয়সালকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখতে পান ভুক্তভোগী। মুন্নার বন্ধু হওয়ায় ফয়সালকে আগে থেকেই চিনতেন তরুণী।
এসময় ফয়সাল ভুক্তভোগীর সাথে কথা বলার কৌশলে কক্ষের ভেতর প্রবেশ করে খাটের উপর বসেন। কথা বলার একপর্যায়ে তরুণীর মুখমন্ডলে কিল-ঘুষি মারেন, গলা চেপে ধরে ও টান মেরে ভুক্তভোগীর স্যালোয়ার খুলে ফেলেন। পরে খুন জখমের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে তরুণীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করেন ফয়সাল। ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ও পরে পুলিশ এসে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার ও ফয়সালসহ তরুণীকে থানায় নিয়ে আসেন। ভুক্তভোগী তার অভিযোগে এসব তথ্য লিপিবদ্ধ করেছেন।
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তরুণীসহ মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় ও তার বন্ধু জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবিদ হাসান মুন্না মিয়া ও হোটেল ম্যানেজার পিষুষ দেবনাথকে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর রাতে ওই তরুণী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গত ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় এ ঘটনায় ‘দ্যা মেইল বিডি ডটকম’ অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর পরপরই ওইদিন রাত সোয়া ৯টার দিকে দুর্জয়কে জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার আলম এলিন ও সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহাবুব চৌধুরী তাদের দুজনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক মো. ফয়সাল আহমেদকে দল থেকে বহিস্কারাদেশ প্রদান করেন।