রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-এ শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙার সময় এক নারীসহ দুজনকে মারধর করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
তাদের মধ্যে একজন পুরুষ ও একজন নারী। ওই নারী যুব মহিলা লীগের সদস্য বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। পুরুষ ব্যক্তিটির নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ওই নারী এসে ‘বঙ্গবন্ধুর বাড়ি এটা, না ভাঙাই ভালো’ এমন কথা বলছিলেন। অন্যদিকে কথা বলার সময় ‘আপার বাড়ি’ বলায় এক পুরুষের ওপর হামলা চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। পুরুষ ব্যক্তিটি এসে সংবাদকর্মীদের লাইভ করতে নিষেধ করেন বলেও জানান তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও বলেন, দেশের মধ্যে অরাজকতা করতেই তাদেরকে পাঠানো হয়েছে। এটা আওয়ামী লীগের নীল নকশা। তারা কলকাতায় বসে বসে দেশের এই অবস্থা দেখে কর্মীদের পাঠিয়েছে। তারা জানে এখানে আসলে মার খাবেন। তারপরও তারা পাঠিয়েছে। কারণ এটা তারা প্রচার করতে পারবে। মার খাওয়ার উদ্দেশ্যেই তারা এখানে এসেছে।
এর আগে গতকাল বুধবার রাতে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করা হয়। পলাতক অবস্থায় তার এই বক্তব্য প্রচারকে ঘিরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়াদের মাঝে। দিনেই ঘোষণা দেয়া হয় শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচারের সময় ধানমন্ডির ৩২-এর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। রাত আটটার দিকে দলে দলে শিক্ষার্থী ও বিক্ষুব্ধ মানুষ ধানমন্ডি ৩২-এর দিকে যেতে থাকেন। ফটক ভেঙে শিক্ষার্থী ও জনতা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। তাদের কেউ কেউ হাতে থাকা লাঠি ও ভারি বস্তু দিয়ে স্থাপনার বিভিন্ন অংশে ভাঙচুর করেন।
পরে আজ বৃহস্পতিবার সকালেও ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙা হয়।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ই আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। অভ্যুত্থানের দিনেই শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাসস্থান ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় ছাত্র-জনতা। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে এই ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। শেখ মুজিবুর রহমানের পারিবারিক এই বাসস্থান সর্বশেষ ‘বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে পরিচিত ছিল।