নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজ সম্প্রতি সরকারি হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ ও পরে বাতিলের একটি ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে কলেজের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শফিকুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে একই দিন বিকেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর থেকে আরেকটি পত্রের মাধ্যমে এই নিয়োগ আদেশটি বাতিল করা হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (কলেজ-১) মুহাম্মদ সফিউল বশর স্বাক্ষরিত দুটি পৃথক পত্র থেকে এই তথ্য জানা যায়। তবে কী কারণে এই নিয়োগ আদেশটি বাতিল করা হয়েছে বাতিল আদেশের পত্রে তা উল্লেখ করা হয়নি। ফলে এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
কেন্দুয়া ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর হোসেন তালুকদার অবসর গ্রহণ করার পর থেকে পদটি শূন্য ছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী, কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে শফিকুল আলমকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সকালেই এক অফিস আদেশ জারি করা হয়। কিন্তু বিকেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আরেকটি পত্রে সেই আদেশ বাতিল করা হয়। যা নিয়ে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নিয়োগ বাতিলের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে সহকারী অধ্যাপক শফিকুল আলম বলেন, “সকালে নিয়ম অনুযায়ী আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিকেলে কোনো কারণ ছাড়াই সেই আদেশ বাতিল করা হয়। কেন তা হলো, সে বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।”
এমন কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে এলাকায় নানা মতামত ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষাপ্রেমী এবং স্থানীয় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, কলেজের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে শফিকুল আলম নিয়মতান্ত্রিকভাবেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার যোগ্য ছিলেন। কিন্তু তাকে সকালেই নিয়োগ দিয়ে বিকেলে সেই আদেশ বাতিল করা তা নিয়ে অনেকের কাছে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং অপমানজনক বলে মনে করা হচ্ছে।
একজন স্থানীয় শিক্ষাবিদ মন্তব্য করেন, “শফিকুল আলম একজন দক্ষ শিক্ষক। নিয়ম অনুযায়ী তাকে নিয়োগ দেওয়া হলেও কেন সেই আদেশ হঠাৎ বাতিল করা হলো, তা স্পষ্ট নয়। এরকম পদক্ষেপ একজন শিক্ষকের মর্যাদার সাথে মানানসই নয়।”
নিয়োগ ও বাতিলের এই দ্বৈত সিদ্ধান্তে কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই ধরনের অস্থিরতা শিক্ষার পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, শিক্ষাবিদ ও সাধারণ মানুষ আশা করছেন, বিষয়টির দ্রুত সমাধান হবে এবং কলেজের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় থাকবে।