জবি প্রতিনিধি:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে ৩৭টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে পূজা। ইতোমধ্যে প্রতিমা গড়ার কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এখন চলছে সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে নিজ নিজ মণ্ডপ সাজাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আগামীকাল (সোমবার) সকাল ৮টা থেকে ক্যাম্পাসে বাণী অর্চনা, আরতি ও পুষ্পাঞ্জলির মাধ্যমে পূজা শুরু হবে।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা প্রাণবন্ত পরিবেশে মণ্ডপ সাজানোর কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩টি বিভাগ, ২টি ইনস্টিটিউট, চারুকলা অনুষদ এবং ছাত্রী হল থেকে পৃথক পৃথকভাবে ৩৭টি মণ্ডপ নির্মাণ করা হয়েছে। পূজা উপলক্ষে ক্যাম্পাসের চারপাশ যেন আলোকসজ্জায় নতুন এক রূপ পেয়েছে। সরস্বতী পূজার মধ্য দিয়ে বিদ্যার দেবীর আশীর্বাদ গ্রহণের পাশাপাশি নিজেদের ঐক্য ও সৃজনশীলতাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী লাবণ্য কুমার রায় বাপ্পী বলেন, “সরস্বতী পূজা আমাদের জন্য শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি আমাদের সৃজনশীলতা ও বন্ধুত্বের মেলবন্ধন। মণ্ডপ সাজানো থেকে শুরু করে অঞ্জলি দেওয়া পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্ত স্মরণীয় হয়ে থাকে।” গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জয়ন্তী রায় বলেন, “এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একসঙ্গে বন্ধুদের সঙ্গে দিনটি উদযাপন করাই সবচেয়ে আনন্দের বিষয়।” চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী সৌমিত্র দাস বলেন, “প্রতিবছর প্রতিমা নির্মাণে আমরা চারুকলার শিক্ষার্থীরা বিশেষ ভূমিকা রাখি।
আমাদের হাতের ছোঁয়ায় প্রতিমাগুলো প্রাণ পায়, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।” বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, “আজ রাতের মধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করা হবে।” ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মহাশ্বেতা রায় মিতু বলেন, “আমি প্রতি বছর মা সরস্বতীর পায়ে খাতা-কলম রেখে আশীর্বাদ নিই। মা যেন আমাদের পড়াশোনায় সফলতা দেন, সেই প্রার্থনা করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক জানান, “পূজাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা টিম সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবে। ক্যাম্পাসজুড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং রাত ৮টার মধ্যে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”