জুনায়েদ মাসুদ, জবি প্রতিনিধি;
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসনসহ একাধিক দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।
আগামী রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল আটটায় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনের অভিমুখে এ কর্মসূচি শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তারা। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী দেশদেশান্তরকে কর্মসূচির বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরে কোনো বাধা নেই এবং মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সহযোগিতা করবে।
তবে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। গণঅনশনের আহ্বানকারী, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মোঃ ফয়সাল মুরাদ বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য আপৎকালীন অস্থায়ী আবাসন নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছিলাম।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে, যেসব প্রত্যাশা নিয়ে আমরা এই দাবিগুলো তুলেছিলাম, তার কোনোটিই এখনো আশার আলো দেখাতে পারেনি। প্রশাসন বারবার আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এই আন্দোলন প্রতিটি প্রান্তিক শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এবং একটি আদর্শ পড়াশোনার পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে।” পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের স্বপ্ন প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনের গভীরে গেঁথে আছে।
প্রতিদিনের সীমাবদ্ধতা, আবাসনের অভাব, সুষ্ঠু গবেষণা ও পর্যাপ্ত ক্লাসরুমের সংকটে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে চলা শিক্ষার্থীদের জন্য কেরানীগঞ্জের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস যেন এক আশার আলো। আমরা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছি, কিন্তু প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এটা সম্ভব হচ্ছে না।
নানা টালবাহানার মাধ্যমে তারা দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজকে ত্বরান্বিত করছে না। তাই আজ শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে এই দাবি তুলছে—দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজের সেই দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে হোক।” ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ বলেন, “বিপ্লব পরবর্তী আমরা আমাদের ২০ হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি ২য় ক্যাম্পাস ও আবাসন সংকট সমাধানের জন্য প্রশাসনকে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দিয়েছি। কিন্তু তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে এখনো এই বিষয়গুলোর সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখতে না পেয়ে আমরা হতাশ।
আমি মনে করি, এই সরকার থাকাকালীন যদি আমরা আমাদের মৌলিক দাবি ২য় ক্যাম্পাস ও আবাসন সংকট সমাধান করতে না পারি, তাহলে আর কখনোই তা সম্ভব হবে না। তাই আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য, ২০ হাজার শিক্ষার্থীর স্বপ্ন সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।”