কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন: নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগে ক্ষতিসাধন এবং মারপিট করে অর্থ লুটের মামলা ছাত্রদল নেতার উপর। এমন অভিযোগে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার ওমরগাঁও গ্রামের জলিলুর রহমানের ছেলে গোলাম মোস্তফা (৩৮)।
এ মামলায় প্রধান আসামি আব্দুল মোতালিবের ছেলে ও কলমাকান্দা উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক শাহাদাত হোসেন টিটু (৩২) ও তার ছোট ভাই মো. মিঠুন (২৩)। অপর এজাহারনামীয় আসামি হলেন তাদের চাচাতো ভাই মো. অন্তর (২৬)। আসামিরা সকলেই কলমাকান্দার নল্লাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০-১২ জনকে।
এজাহানামীয় আসামিদের গ্রেফতার করতে না পারলেও কাদির মিয়া (২৭) ও জনি মিয়া (২২) নামে দুজন অজ্ঞাতনামা আসামিকে আটক করতে পেরেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কলমাকান্দা থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ হোসেন মামলা রুজুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এজাহারনামীয় আসামিদের আত্মীয় দুজন অজ্ঞাতনামা আসামিকে আটক করা হয়েছে। আটক দুজনকে আজ (মঙ্গলবার) জেলা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ বলে জানান তিনি।
বাদী গোলাম মোস্তফার এজাহার সূত্রে, তিনি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক। গত ২২ ডিসেম্বর বাদী কলমাকান্দার রেইনট্রিতলা মোড়ে অবস্থানকালে আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শাহাদাত হোসেন টিটু বাদীর কাছে আসেন। তিনি (টিটু) জিজ্ঞেস করেন বাদীর গ্রিস প্রবাসী ছোট ভাই মামুন হোসেন (৩৬) দেশে এসেছে কিনা। বাদী বলে দেশে এসেছে। পরে টিটু মোটরসাইকেল ভাড়ায় নেত্রকোনা যাবে। বাদী ১২০ টাকা ভাড়া দাবি করলে টিটু বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে চলে যায়।
পরবর্তীতে গত ২৩ ডিসেম্বর দুপুর ১টার দিকে বাদী ও তার গ্রিস নাগরিক ভাই মামুনকে সাথে নিয়ে ডাইয়ারকান্দা বাজারে শামীম স্টোর নামক দোকানের সামনে পাকা রাস্তায় পৌঁছালে টিটু অজ্ঞাত আসামিগণসহ লাঠিশোটা হাতে নিয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধে তাদের পথরোধ করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। বাদীর ছোট ভাই গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে মামুনকে কিলঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্নস্থানে নীলাফুলা জখম করে আসামিরা। পরে আসামি অন্তর বাদীকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় চেপে ধরেন।
এসময় টিটুসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন আসামি মামুনকে মাটিকে ফেলে মুখমন্ডল, বুকে, পিঠে লাথি ও লোহার রড দিয়ে মেরে ছিলাফুলা গুরুতর জখম করে এবং আসামি টিটু মামুনের ব্লেজারের বাম পকেটে থাকা ১১ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
বাদী ও তার ছোট ভাইকে মারপিঠের একপর্যায়ে আসামি মিঠুনসহ অজ্ঞাত আসামিরা ডিসকভার ১১০সিসি মোটরসাইকেল অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতি সাধন করে। স্থানীয় লোকজন উদ্ধারে এগিয়ে আসলে ভবিয্যতে বাদী ও তার ছোট ভাইকে সামনে পেলে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে চলে যায় আসামিরা। বাদীর এজাহার থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।