রুহুল আমিন (গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি)
গাজীপুর জেলার গাজীপুর সদর উপজেলায় বানিয়ারচালা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে ভারত থেকে চোরাই পথে চিনি, কম্বল ও মাদক এনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গোপন সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে এসব পণ্য অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করিয়ে গাজীপুরসহ আশেপাশের এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।সূত্র মতে, চক্রটি প্রথমে সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে চিনি, কম্বল ও মাদক সংগ্রহ করে। পরে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ করে মোটা অংকের মুনাফা অর্জন করে। শীত মৌসুমে কম্বলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের চোরাচালানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় রুস্তম আলী (৩৫) এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বায়রা অলী নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চিনি, শীতের কম্বল, মদ এবং অন্যান্য ভারতীয় পণ্য অবৈধভাবে এনে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছেন।জানা যায়, রুস্তম আলী গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা এলাকায় স্থানীয় মৃত সামেদ আলী হকের বাড়ি ভাড়া নিয়ে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। এ সময় রুস্তম সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হলে, বিভিন্ন মাধ্যমে ফোন দিয়ে সংবাদকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, রুস্তম ভারত থেকে চোরাই পথে চিনি এনে কম দামে বিক্রি করছেন। তিনি আরও জানান, আমি একবার তার কাছ থেকে এক বস্তা চিনি কিনেছিলাম। এছাড়া তিনি ভারতীয় কম্বল দিয়ে তোশক বানিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে বিক্রি করেন। মদসহ বিভিন্ন মাদকও অবৈধভাবে এনে বিক্রি করেন।অন্য এক সূত্র জানায়, রুস্তম একসময় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে গত সাত-আট মাস ধরে চোরাচালানে জড়িত হয়ে এই অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে আয় করছেন। ফলে এখন আর তাকে অটোরিকশা চালাতে হয় না।গাজীপুরের স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, চোরাই পণ্য বাজারে প্রবেশ করায় ন্যায্যমূল্যে আসল পণ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি মাদকের সহজলভ্যতাও সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। চোরাচালান চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সীমান্ত সুরক্ষা ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে চোরাচালান প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। দেশবাসীও এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন।