মনিরুজ্জামান খান গাইবান্ধা,
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের বাজুনিয়াপাড়া গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে কথিত শহিদুল ইসলাম (খুশরু) কয়েনম্যান, কখনো পুতুল পার্টি, আবার গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অভিনব প্রতারণা করছেন।
এই প্রতারক চক্রের সংঘবদ্ধ দল রয়েছে তার মধ্যে দুজন মহিলা ও ৭ জন পুরুষ রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানিয়েছে ।এই সংঘবদ্ধ চক্রের সিন্ডেকেট বিভিন্ন জেলার। তারপর মধ্যে অন্যতম হোতা অজিফা ম্যাডাম জানা গেছে তার বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়।একে দিয়েই মূলত লোভ দেখানো হয়। অপরজন সফিকুল ইসলাম,বাকি সদস্যর নাম জানা যায়নি যদিও এই সিন্ডিকেটের লোকজন বিভিন্ন জেলার।
ইতিমধ্যেই তাদের প্রতারনার বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় অভিযোগ পত্র জমা হয়েছে।আজ (২৬ অক্টোবর) শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি বুলবুল ইসলাম ,
এদিকে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে বলা হয় সরকারী প্রনোদণা এসেছে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমাদেন তাহলে আপনাকে প্রণোদণা দেওয়া হবে। ভোটার আইডি ফটোকপি জমা দিলে চক্রের জালে আটকে গেল ঐ ব্যক্তি। এরপর শুরু হয় প্রলোভন।
এর ফাঁদে বাদ যায়নি ছেলে ও বাবা, হরিপুর গ্রামের ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্র মুন্না জানান বাবা-মায়ের কাছে বই কেনার ৩ হাজার টাকা নিয়ে ওই প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেন। ওই গ্রামের আরেক মুন্না ১৫ টাকা দিয়েছেন,তারই বাবা রহিদুল তিনিও ৫০০ টাকা দিয়েছেন ওই প্রতারক চক্রের হাতে। তাদেরকে বলা হয়েছে একটি আইফোন ও ১০ লক্ষ টাকা পাবে এভাবেই কেটে গেছে দের বছর।
ভুক্তভোগীরা জানান বিভিন্ন অজুহাতে শুরু হয় তাদের টাকা নেওয়ার কৌশল । কখন বলা হয় আপনার ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে খরচের টাকা দিতে হবে। কখনো আবার বলে বড় স্যাররা আসবে তাদের জন্য মঞ্চ বানানো খরচ লাগবে। আবার বলে আপনাদের একাউন্টে ডলার জমা হবে এই ডলার তোলার জন্য পঁচিশ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিতে হবে এই ছবি গুলো বিভিন্ন দেশের ব্যাংক একাউন্টে জমা দিতে হবে।
এবিষয়ে হরিরামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিপ্লব বলেন আমার জানা মতে এক হাজার লোকের কাছ থেকে বিভিন্ন কথা বলে টাকা নিয়েছে প্রতারণা করে।
যেহেতু অন্যদের ব্যাপার এবং কোটি টাকার বিষয় একারনে টাকা গুলো সহজে আনা সম্ভব হচ্ছে না তাই সময় লাগছে। এভাবে দুই বছর যাবত প্রায় ২০ হাজার মানুষের নিকট হতে ভোটার আইডি জমা নিয়ে টাকা নিয়েছে এই চক্রটি । ভুক্তভোগীরা যখন টাকার জন্য চাপ দেয় তখন এই চক্রটি সুন্দরগঞ্জে এক মহিলা এই চক্রের সদস্য অজিফা ম্যাডামকে ডেকে এনে এই সাধারন মানুষকে বোকা বানায়।
অজিফা এসে এই গ্রামের সহজ সরল মানুষকে বলে নাকাই বাজারে আর্মি ক্যাম্প হবে। এই মানুষ গুলোকে সিকিউরিটি দেওয়ার জন্য। প্রতি সদস্যদের জন্য টাকার ব্যাগ গুলো দিনাজপুর ইয়ারপোর্টে এসেছে অপেক্ষা করেন আগামী ১৫ দিনের মধ্য টাকা পেয়ে যাবেন এই পনের দিন পরে এক একজন কোটি টাকার মালিক হবেন তখন তো আমাদের চিনবেন না। আমরা আপনদের জন্য কাজ করছি শহিদুলকে সহযোগিতা করেন তাহলে টাকা পেতে সহজ হবে। এভাবে দিন,মাস বছর পার করে সাধারন মানুষকে বোকা বানাচ্ছে এই প্রতারক চক্র।
নাকাই, হরিরামপুরসহ উপজেলার সকল ইউনিয়ন। সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া,কামালের পাড়া ইউনিয়নসহ জেলায় চলছে প্রতারণার ফাঁদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ।
উপজেলার হরিরামপুর ইউনিয়নের বাজুনিয়াপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম(খচুরু) নিজে এবং কর্মি নিয়োগ করে সদস্য ভর্তি ফি ৩০০০,৫০০০, ৮০০০, ১০০০০, ১২০০০, পর্যন্ত আদায় করে নিচ্ছে।গত দু বছরে প্রায় ১০হাজার ১২,হাজার করে প্রায় ৪০ হাজার সদস্য ভর্তি করে নেয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমাদেরকে জানিয়েছেন খচুরুর নিকটতম কর্মী। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত একজন সদস্যকেও কাঙ্খিত টাকা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
এলাকাবাসী অনতিবিলম্বে এই প্রতারককে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।এদিকে প্রতারণা প্রতিবাদ করায় ভুক্তভোগী পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি ও জীবননাশের হুমকি দিচ্ছে শহিদুল ইসলামও তার সংঘবদ্ধ চক্রটি।এবিষয়ে প্রতারক চক্রের হোতা শহিদুল ইসলাম খুচরু বলেন। এটা সরকারী প্রকল্প, আগামী এক মাসের মধ্য সবাই জানতে পারবে। সরকারী কোন প্রকল্প তার সদ্য উত্তর দিতে পারেনি।
চক্রের সহযোগী হরিরামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক মেম্বার শাহারুল বলেন, এটা কোন সমস্যা নাই কে নিউজ করে করুক। একমাসের মধ্য বর্তমান সরকার ডঃ ইউনুস আমাদের এখানে আসবে সকল সদস্য টাকা পাবে এটা সরকারী প্রজেক্ট।
সরকারী প্রজেক্টে নাম বলেন কেন টাকা তুলছেন এমন প্রশ্নের উত্তর মেলেনিএ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, অতিদ্রুত এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।