সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিং কর্মীদের চাকরি পুনর্বহাল করার দাবিতে পালন করা অবস্থান কর্মসূচি চলমান থাকায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হয়। রবিবার সকাল থেকে তারা হাসপাতালের ভবনের সামনে পুনরায় অবস্থান নেয়। এসময় হাসপাতালের সামনে উচ্চ শব্দে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান ও প্রবেশ পথ দখল করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যহত হয়। এক পর্যায়ে সাধারণ রোগীদের মনে দেখা দেয় আতঙ্ক।
এমতাবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখতে হাসপাতালে আসেন সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনরত কর্মচারীদের সাথে কথা বলে শান্তিপূর্ণ সমাধান করার লক্ষ্যে তাদের নিয়ে হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভায় বসেন। এসময় আন্দোলনরত আউটসোর্সিং কর্মচারীদের প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের উপপরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক) ডা. মাহবুবুর রহমান সহ হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী বুধবার সকল আউটসোর্সিং কর্মচারীদের নিয়ে আবারও আলোচনা সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আউটসোর্সিং কর্মীরা জানান সেনাবাহীনির প্রতি আস্থা রেখে আন্দোলন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।
জানা যায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ২০২২ সালে নিয়োগ দেয়া হয় ৬৪ জন আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মী। এরপর ২০২৩ সালে তাদের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাদের সাথে করা চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালে না আসার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। যদিও তাদের নিয়োগ ও কাজ নিয়ে নানান সময় প্রশ্ন উঠেছিল। কাজে না এসেও অনেকের বিরুদ্ধে বেতন নেয়ার অভিযোগও ছিল।
তবে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষরিত ১২ জুনের অফিস আদেশ বলছে, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগকৃত কর্মীদের চুক্তি বৃদ্ধি করা যাবেনা। নতুন টেন্ডার আহবান করে নতুন মানুষ নিতে হবে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে একই সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট একটি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে একাধারে কাজ করার ফলে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়। তাই আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় কর্মী সেবা ক্রয়ে মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনা মানার আদেশ দেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক আলোচনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাদের আন্দোলনের তোপে হাসপাতালের সার্বিক নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখতে তাদেরকে নিয়ে আলোচনা সভায় বসা হয় । সভায় আগামী বুধবার তাদের নিয়ে আরও একটি সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।