মনিরুজ্জামান খান, গাইবান্ধায় সড়কে নেই কোনো ট্রাফিক পুলিশ। এই অবস্থায় টানা তিনদিন ধরেই রাস্তায় সড়কে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় রয়েছেন আনসার, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গাইবান্ধা গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল সড়কে দেখা গেছে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন।
গাইবান্ধা শহরের পুরাতন জেলখানা মোড়, ১নং রেলগেট, ডিবি রোড, পার্কের মোড়, পুরাতন বাজার ,বাসস্ট্যান্ডসহ,জেলার ৭ উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে, সড়ক ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়,গাইবান্ধায় আনছার বাহিনীর সাথে সাধারণ শিক্ষার্থী, অভার স্কাউট দল, ব্লাড ইয়ুথ অর্গানাইজেশন,রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।
ব্লাড ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের জামিল ও অয়ন বলেন সাধারণ মানুষ ঘুষ হয়রানির পরিত্রাণ পেতে ট্রাফিক নুতন রুপে ফিরে আসুক, সেই সাথে তারা মানুষের সাথে সুন্দর ভাবে কথা বলুক ।
অভার স্কাউট দলের ফুয়াদ মন্ডল সরকার কলেজ ও জীবন পড়েন গাইবান্ধা সরকারী টেকনিক্যাল কলেজে তাদের দুজনকেই দেখা যায় রাস্তায় সিগন্যালের পাশাপাশি তারা গণপরিবহনগুলো নির্দিষ্ট স্থান থামার নির্দেশনা দিচ্ছেন। নিয়ম মেনে চলতে মানুষ ও গাড়িচালকদের বাধ্য করছেন। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তারা মানুষকে নিয়ম-শৃঙ্খলা শেখাচ্ছেন।
গাইবান্ধা ১ নং রেলগটও পার্কের মোড়ে রয়েছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও শিক্ষার্থীসহ ১০ জন সেখানে বিএনসিসি ক্যাডেটের ফুয়াদ মন্ডল বলেন, ট্রাফিক পুলিশের কাজ আসলেই কষ্টের। নুতন রুপে ফিরে আসুক আর তারা একটু সহানুভূতি দেখাক এটাই আমরা চাই,
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইভা বগুড়া আজিজুল হক কলেজে পড়ে ও নুর নাহার বলেন, তারা যে কাজটা করে আমরা তা করতে পারবোনা রোদ বৃষ্টি ঝড়ে ডিউটি করে। তারপরও আমরা রাস্তায় যেন শৃঙ্খলা ফিরে আসে এই চেষ্টা করছি,
ফরহাদ আকন্দ বলেন ট্রাফিক পুলিশের কাজ অনেক কষ্টের,দেশের জন্য কাজ করছি আমরা পুলিশের ভুমিকায়, তারা দ্রুত মাঠে ফিরে আসুক।
গাইবান্ধা সরকারি কলেজ বিএনসিসি ক্যাডেট,রাব্বি ও সাদমান তারা জানান আমরা আনন্দ সহকারে কাজ করছি।একই সাথে সাধারণ শিক্ষার্থী সাদিয়াও জেসমিন মহিলা কলেজে পড়ে তারাও ট্রাফিকের ভূমিকায় দেখা যায়, রেড ক্রিসেন্ট কাজ করা বেশ ক’জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয় তারা বলেন এর আগেও ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেছি। সেই অভিজ্ঞতা এখন কাজে লাগছে। মানুষ কিছুটা বিরক্তবোধ করছে। কিন্তু আমরা চাই সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা আসুক। মানুষ কিছুটা শিখে গেলে পরে এই ধারা বজায় থাকবে।
গাইবান্ধা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাগর ও রাকিব বলেন, যতদিন না ট্রাফিক পুলিশ আসে আমরা রাস্তায় থাকবো। সিগন্যালের পাশাপাশি গাড়িগুলো যেন লাইন ধরে চলে সেটা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আমাদের কষ্ট হচ্ছে, ভালো লাগছে মানুষকে সচেতন করা যাচ্ছে। অভিজ্ঞতাও হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের এই ভূমিকায় খুশি পথচারী ও গণপরিবহনের চালকরা। তারা জানান, পুলিশ নেই কিন্ত সড়কে বিশৃঙ্খলা নেই। শিক্ষার্থীরা কাজ করে যাচ্ছে। খুব বেশি যানজট তৈরি হচ্ছে না।
গাইবান্ধা- ঢাকা একটি কোচ পরিবহনের এক চালক জানান, শিক্ষার্থীরা নিয়ম করেই সিগন্যাল দিচ্ছেন। কোনো ভোগান্তি নেই।