তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সরকারি টাকায় নিজের বাড়ির রাস্তা পাকা করলেন ফয়জুন নেছা নামক এক মহিলা ইউপি সদস্যা। গ্রামের স্কুলের রাস্তাসহ গ্রামবাসী চলাচলের একাধিক জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা পাকা না করে ইউপি সদস্যা তাঁর নিজের বাড়ির রাস্তা পাকা করে গ্রামবাসীর সাথে দাম্বিকতা দেখালেন।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে এলাকায় চলছে নানান সমালোচনা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা গ্রামে।
জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা তহবিল (এডিবি) থেকে দেড় লাখ টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে নিজের বাড়িতে যাওয়ার কাঁচা রাস্তাটি ইটসলিং কাজ করেন ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা
ওয়ার্ডের সদস্যা ফয়জুন নেছা। ওই রাস্তাটি চৌধুরীবাজার-কৌলা সড়কে অবস্থিত কারিতাস অফিস সংলগ্ন প্রধান সড়ক থেকে দক্ষিণমুখী এলাকায় পড়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দেড় লাখ টাকার প্রকল্পে মহিলা সদস্য ফয়জুন নেছার বাড়িতে প্রবেশমুখে মাত্র ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যর রাস্তা করা হয়। বাকি টাকা ইউপি সদস্যা ফয়জুন নেছা, চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টরা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। এই টাকা আত্মসাৎ করে তারা এলাকার জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন।
কৌলা গ্রামের প্রবীণ মুরব্বী ও রাজনীতিবিদ মোতাহের আলম চৌধুরী বলেন, সরকারি টাকা দিয়ে গ্রামের জনগণের চলাচলের রাস্তার কাজ হবে এটাই নিয়ম। কিন্ত আমাদের এলাকায় সেই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মহিলা সদস্যের বাড়ির রাস্তার কাজ করা মোটেই ঠিক হয়নি।
অভিযুক্ত সংরক্ষিত মহিলা সদস্যা ও প্রকল্প সভাপতি ফয়জুন নেছার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর কোন কথা না বলে কেটে দেন।
রাউৎগাঁও ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সুফিয়ান বলেন, ওয়ার্ডের ভেতর কোন প্রকল্প নেয়ার আগে ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা করতে হয় কিন্তু এই প্রকল্প অনুমোদনে কোন সভা হয়নি। গ্রামের মানুষের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় কাজ করা দরকার ছিল।
রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তুষার কান্তি বলেন, প্রকল্পটি নেয়ার পূর্বে প্রথমে ওয়ার্ড পর্যায়ে সভা করে প্রস্তাবনা দিলে পরিষদের সভায় সেটি অনুমোদন দেয়া হয়। তবে রাস্তাটি যে ইউপি সদস্যর ব্যক্তিগত রাস্তা সেটি আমার জানা ছিলনা। ভবিষ্যতে এই ধরণের প্রকল্প অনুমোদনে সতর্ক থাকবো।
রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকবর আলী সোহাগ বলেন, প্রকল্প মোতাবেক কাজ হয়েছে, তাই কাজের বিল দেয়া হয়েছে। পরিষদের টাকা দিয়ে কিভাবে ইউপি সদস্যের বাড়ি রাস্তা পাঁকা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অতীতে এই ইউনিয়নের অনেক সদস্যের বাড়ির রাস্তা পাঁকাকরণ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।