বকশীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ রাহিন হোসেন রায়হান
বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুর পাড়া ইউনিয়নে চর আইরমারী আক্কাছ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াতের কোনো রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গ্রামের ধানক্ষেতের সরু নিচু আইল দিয়ে যাতায়াতের একমাত্র পথ। এতে ওই এলাকার প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১১-২০১২ইং সালে ওই এলাকার স্বহৃদয়বান আক্কাছ আলী স্কুলটি নির্মাণের জন্য ৩৩ শতাংশ জায়গা দান করেন। তার দান সূত্রে জায়গার উপরেই চর আইরমারী আক্কাছ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বর্তমানে সকল শ্রেণি মিলিয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ২৫০ জন।
বিদ্যালয়ের চারিপাশেই ধানক্ষেত ও নিচু এলাকা। প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে শিশুদের যাতায়াতের জন্য যে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে তা ধানক্ষেতের ভেতর দিয়ে অতি নিচু রাস্তা ফলে তাদের ধানক্ষেতের নিচু সরু আইল দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে বা একটুখানি বৃষ্টি হলেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ওঠে এই রাস্তাটি।
উপজেলার সাধুর পাড়া ইউনিয়নের চর আইরমারী গ্রামে অবস্থিত বিদ্যালয়টিতে যাতায়াতে মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। সরু ও নিচু রাস্তা হওয়ায় একটুখানি বৃষ্টি হলেই শিক্ষার্থীরা পরেন চরম বিপাকে অনেক সময় প্যাক কাদায় পিছলে পড়ে গিয়ে কাপড়, বই, খাতা ভিজিয়ে নষ্ট করে ফেলেন।
অত্র বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সামিয়া আক্তার স্মৃতি আমাদের বলেন, ভালো রাস্তা না থাকাই আমাদের চলাচল করাটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
একটুখানি বৃষ্টি হলেই ওই নিচু জমিটুকু পানিতে তলিয়ে যায় ফলে আমাদের স্কুলে আসাটা বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। মাঝেমধ্য পিচ্ছিল রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে আমাদের দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। এ ব্যাপারে আমাদের অভিভাবকরা স্কুলে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ সোজাদুল ইসলাম বলেন, রাস্তা না থাকায় অনেক ভোগান্তি হয়। স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীরা আসতে চায় না। অভিভাবকরা বাচ্চাদের দিতে চান না। বর্ষা মৌসুমে আরো বেশি সমস্যা হয়। জমির আইল দিয়ে আসতে গিয়ে পিছলে পড়ে বইখাতা ভিজে যাওয়ারও ঘটনাও ঘটছে।
শুরুর দিকে প্রায় ৩০০ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল। এখন সব শ্রেণি মিলিয়ে পড়ে ২০০ জন। রাস্তা না থাকার কারণে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নও হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রসিদুল ইসলাম (রসিদ) আমাদের বলেন, গ্রামীন রাস্তা না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। দুর্ভোগের কথা বারবার জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ কারণে দিন দিন ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী কমে যাচ্ছে।
বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুর পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান (জিয়া) সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আমাদের বলেন, অত্র বিদ্যালয়ের রাস্তাটি নিচু সেখানে মাটি ভরাট করতে হবে। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে কোন বরাদ্দ নেই বরাদ্দ পেলে ওই বিদ্যালয়ের রাস্তার কাজটি করা হবে।
তিনি আরো বলেন, যদি এমপি মহোদয় এবং উপজেলা চেয়ারম্যান সহযোগিতা করে তবে রাস্তার কাজটি করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে অত্র বিদ্যালয়ের কমিটিবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকরা উপজেলা প্রশাসন, শিক্ষা কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, মাননীয় এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।