জলঢাকা প্রতিনিধি:
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায় অনিয়ম, অব্যবস্থাপনাসহ পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার কারণে স্কুলের সকল পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেছে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: আশরাফুল আলম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম ।
গতকাল ( ৩১ শে মে) উপজেলার কৈমারী ইউনিয়ন গাবরোল তহশিলদার পাড়া দ্বী-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাবরোল তহশিলদার পাড়া দ্বী- মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে ৬টি পদে নিয়োগ পরিক্ষা হওয়ার কথা।
সকাল ১১ টায় নিয়োগ পরিক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়। সে অনুযায়ী ৬টি পদে আবেদনকারী প্রার্থীরা পরিক্ষা দিতে সকাল ১১ টার মধ্যে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হতে থাকে। পদ ৬টি হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক, অফিস সহকারী, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তা কর্মী, নৈশ্য প্রহরী ও আয়া।
যথা সময়ে নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হলেও অফিস সহায়ক পদ নিয়ে নিয়োগ কমিটির লোকদের সাথে নিয়োগ প্রার্থীর হট্টগোল শুরু হয়।এসময় নিয়োগ পরিক্ষার হলরুমে অফিস সহায়ক পদের এক পরিক্ষার্থী কে হাউমাউ করে কাঁদতে দেখা যায়।
এ সময় জানা যায় তিনিই অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য ফয়জুল ইসলামের পুত্র নিয়োগ পরিক্ষায় আবেদনকারী মনিরুজ্জামান ( ২৪ ) পরিক্ষার হলরুমের দরজায় গিয়ে পরিক্ষা বন্ধের দাবীতে অশ্রুসিক্ত হয়ে হাউমাউ করে মাটিতে লুটিয়ে পরেন। তৎক্ষনাৎ তার পরিবারের লোকজন সহ এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় বিদ্যালয় মাঠে চরম থমথমে ও উত্তেজনা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পরে ঐ পরিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন,আমি আবেদন করেছিলাম অফিস সহায়ক পদে। কিন্তূ নিয়োগ পরিক্ষার দিন আমাকে অফিস সহায়ক পদে পরিক্ষায় সুযোগ না দিয়ে কৌশলে আমাকে নৈশ্য প্রহরী পদের জন্য পরিক্ষা দিতে বলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। এটা কতটা ন্যায় সঙ্গত আপনারাই বলেন।
এ সময় ওই চাকুরী প্রত্যাশী ও তার পরিবারের লোকজন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসী তাদের কথায় একমত পোষণ করে এই অব্যবস্থাপনা, জালিয়াতি, নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করার আহবান জানান।
এ সময় ডিজি’র প্রতিনিধি, ডিসি’র প্রতিনিধি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি / সদস্যসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম পরিক্ষার দিন কৌশলে নিজের অর্পিত দ্বায়িত্ব সহকারী শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র রায়কে নিয়োগ পরিক্ষার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন। নিজেকে দ্বায়মুক্তি রাখার জন্য।
অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র রায় জানান, আমাকে শুধু আজ নিয়োগ পরিক্ষা প্রদানের জন্য ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সব কিছুই প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করেছে। আমি অতটা জানি না।
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম জানান, সব ঠিকঠাকই ছিল। সে নৈশ্য প্রহরী পদেই আবেদন করেছিল। সে অনুযায়ী তাকে এ পদেই পরিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রবেশ পত্র দেয়া হয়েছিল। কিন্তূ অন্যের কুমন্ত্রণা ধরে অফিস সহায়ক পদ দাবী করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক জানান, ডিজির প্রতিনিধি ও ডিসির প্রতিনিধির সঙ্গে আমিও জাস্ট পরিক্ষা ও দেখভালের দায়িত্বে এসেছি।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিই স্বীদ্ধান্ত নিতে পারে পরিক্ষা স্থগিত করবে কি না। পরে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে পরিক্ষা বন্ধের নোটিশ দেয়ালো প্রদর্শন করে উক্ত নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল আলম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তহিদুল ইসলাম।