ইবি প্রতিনিধি:
‘বৈশাখি মঞ্চ’ নির্মাণ করতে একাধিক প্রাচীন গাছ কেটেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্তৃপক্ষ। আশেপাশে ফাঁকা জায়গা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী ও রাজনৈতিক সংগঠন। গত রোববার (৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় এসব গাছ কাটা হয়।
এতে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, ব্যাঙ্গচিত্র ও
স্মারকলিপি প্রদান করেছে সংগঠনগুলো।
সচেতন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি, অনুষদ ও ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভবনের মাঝে মঞ্চ হওয়ায় ক্লাস-পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ফাঁকা জায়গায় এটা করতে পারতো। গাছ না কেটে সুপরিকল্পিতভাবে করার সুযোগ ছিল। কিন্তু যা করা হয়েছে তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও অপরিপক্ক সিন্ধান্তের ফল।
সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় বটতলায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ। কর্মসূচিতে সদস্যদের হাতে ‘প্রকৃতির ক্ষতিকর স্থাপন তৈরি বন্ধ করো; ‘প্রকৃতির ধ্বংস করে উন্নয়ন চাই না; ‘উন্নয়নের নামে গাছ কাটা চলবে না ; সবুজের রক্তক্ষরণ বন্ধ করো; ‘একডেমিক ভবনের পাশে মুক্তমঞ্চ চাই না’, ইত্যাদি প্রতিবাদ সম্বলিত প্লা-কার্ড দেখা যায়। গত রোববার এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশন’ সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এসময় সংগঠনের অর্ধ-শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’ ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শন ও গনস্বাক্ষরের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এদিকে, বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে প্রধান প্রকৌশলী, এস্টেট প্রধান ও কোষাধ্যক্ষ বরাবর পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েস।
অভয়ারণ্যে’র সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ ইমন বলেন,বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের এই পুরনো গাছগুলো আমাদের প্রাণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের স্বার্থে যদি গাছ কাটা হয় তাহলে আমাদের যেন আগে জানানো হয়। একটি গাছ কাটার পর আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু তারা এই গাছগুলো কেটে ফেলেছে।
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি একাডেমিক ভবনের মাঝামাঝি এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বৈশাখী মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি বৃক্ষ নিধন করে বৈশাখি মঞ্চ নির্মাণ বন্ধ না করে তাহলে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গরে তুলবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) কে এম শরীফ উদ্দীন বলেন, প্রশাসন থেকে ওখানে মঞ্চ স্থাপনের নির্দেশনার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্ক ওর্ডার করে দিয়েছি। সকালে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। কাজ চলবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রশাসনের নতুন কোন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আমি কিছু বলতে পারবোনা।
দায়িত্বরত উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূইঁয়াকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।