কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন : ভূমি করের (খাজনা) বিপরীতে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোণার খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (নায়েব) কল্লোল বিশ্বাস ও অফিস সহায়ক (পিয়ন) বদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে। তারা দুজনে জমির খাজনা পরিশোধ দাতাদের কাছ থেকে ভুমি কর বাবদ নেওয়া টাকার বিপরীতে চেক (রশিদ) প্রদান করেন ৮৭ থেকে ৯৮ ভাগ কমে। অর্থাৎ ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নেন চার থেকে ২০ হাজার টাকা। এর বিপরীতে রশিদ দেন ৮৩ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকার মতো। মৃদুল বিশ্বাস নামে একজনের কাছ থেকে চার হাজার টাকার বিপরীতে ৮৩ টাকার রশিদ দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে অফিস সহায়ক বদিউজ্জামান ও সজল নামে এক যুবকের কথোপোথনের কল রেকর্ড থেকে।
এ নিয়ে খালিয়াজুরী সদরের দেলোয়ার হোসেন বলেন, চলতি মাসের তিন তারিখ এক একর সাত শতাংশ খাজনার জন্য নায়েব কল্লোল বিশ্বাস প্রথমে ২৫ হাজার টাকার লাগবে জানায়। সে আরও শোনায় ১২ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারেই জমা দিতে হবে। তাকে বুঝিয়ে ও অনুরোধ করে ১১ হাজার টাকা দিয়ে আসি। গত রবিবার (৮ অক্টোবর) আমাকে এক হাজার ৩৬৪ টাকার রশিদ দেন। রশিদ দেখে নায়েবের কাছে বাকী টাকা ফেরত চাইলে আজ (সোমবার) ফেরত দিয়ে দিবে বলে জানায়।
খালিয়াজুরী সদরে থানার পেছনে বসবাসকারী মৃদুল বিশ্বাস নামে ভুক্তভোগী জানান, জমির খাজনা পরিশোধের জন্য ভূমি অফিসে গেলে বদিউজ্জামান খাজনা বাবদ চার হাজার টাকা নেন। এই টাকা দিলে তিনি আমাকে ৮৩ টাকার চেক (রশিদ) প্রদান করেন।
সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইসহাক ভূমি অফিসের এ ধরণের কর্মকান্ড সম্পর্কে তিনি জানান, বিজয়পুর গ্রামের একজনের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নিয়ে এক হাজার ২০০ টাকার রশিদ দেওয়ার অভিযোগ আমার কাছে আসে। পরে আমি ভুক্তিভোগীসহ আমার এক মেম্বার ও লোকজনকে পাঠালে নায়েব সাহেব টাকা ফেরত দেন। একই গ্রামের আরেকজন ফোন করে জানায় ২০ হাজার টাকার বিপরীতে তাকে এক হাজার ২০০ টাকার রশিদ দিয়েছে। তাদের নাম গুলো এই মুহুর্তে মনে নেই। আমি নেত্রকোণাতে আছি। পরবর্তীতে সংগ্রহ করে দেওয়া যাবে।
এ সব বিষয়ে জানাতে চাইলে খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কল্লোল বিশ্বাস বলেন, অভিযোগ সাজানো ও বানানো। পরে চেয়ারম্যানের লোকজন দরবার করার মাধ্যমে টাকা ফেরত দিয়েছেন ও কয়েকজনের নাম বললে নায়েব বলেন, আপনার সাথে সাক্ষাত ও কথা বলার আগ্রহ দেখিয়ে সংযোগ কেটে দেন তিনি।
অফিস সহায়ক বদিউজ্জামান বলেন, মৃদুল বিশ্বাস নামে কাউকে চিনি না। চেক আমি কাটি না, নায়েব সাহেব কাটেন।
এ বিষয়ে খালিয়াজুরীর সহকারি ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) এটিএম আরিফকে অবগত করা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন কর্মস্থলে এসেছি। বিষয়টি আমার জানান নেই। তিনি প্রতিবেদকের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদেরকে তার অফিসে সাক্ষাত ও অভিযোগ দিতে অনুরোধ করেন।
খালিয়াজুরীর নির্বাহী কর্মকর্তা এম. রবিকুল হাসান বলেন, অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।