সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় পাটলাই নদীতে টোলের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগে বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলি তিন শুল্ক স্টেশনে চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক সমিতির ডাকা অনির্দিষ্টকালের নৌ ধর্মঘট আট দিন পর প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এই তিন শুল্ক স্টেশন থেকে নদীপথে কয়লা ও চুনাপাথর পরিবহন শুরু হয়েছে। নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সচিব রাজেশ তালুকদার। তিনি বলেন, আজ থেকে ক্যারিং চলছে। ধর্মঘট প্রত্যাহার করায় শ্রমিকরা আবার কাজের সুযোগ পেয়েছেন।
এর আগে রোববার বিকেলে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বৈঠকে নদীতে অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধের আশ্বাস পেয়ে নৌ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয় বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তাহিরপুরে পাটলাই নদীর ডাম্পের বাজার নৌকাঘাটে মালামাল লোড দেওয়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী প্রতি নৌকা থেকে ৫০০ টাকা টোল আদায়ের কথা, সেখানে খাস কালেকশনের নামে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আদায় করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রশিদ দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ আছে। এ কারণে এই শুল্ক স্টেশনের ক্রেতা কমে যাচ্ছে। যার ফলে নৌযানও এই পথ দিয়ে কম আসছে। ঐসময় স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় অনির্দিষ্টকালের জন্য মালামাল বিক্রি ও পরিবহন বন্ধ রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে কয়লা ও চুনাপাথর বিক্রয় এবং পাটলাই নদীপথে পরিবহন বন্ধ রাখেন বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলির আমদানিকারকরা। সুনামগঞ্জের এসব শুল্ক স্টেশনের প্রায় ৭০০ আমদানিকারক পাটলাই নদী দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চুনাপাথর ও কয়লা পাঠান।
বিআইডব্লিউটিএর ইজারাদার শাহ রুবেল আহমেদ বলেন, আমরা নিয়ম মেনে টোল আদায় করছি। পূর্বের ইজারাদাররা ৩ মাসের জন্য ২৭ লাখ টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে প্রতি নৌজান থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার আদায় করেছেন, এখন সেই অভিযোগ আমাদের দিচ্ছেন তারা। তখন কি বিআইডব্লিউটিএ বৈধ ছিল? তখনতো তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিলো না। বর্তমানে তাদেরকে বিনা টাকায় শেয়ার না দেওয়ায় বিআইডব্লিউটিএ’র নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমান ইজারাদার ২কোটি ২০ লাখ টাকা সরকারকে রাজস্ব দিয়ে ঘাট ইজারা নিয়ে নিয়মঅনুযায়ী টোল আদায় করায় ক্ষতির মূখে বিআইডব্লিউটির ইজারাদার।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ‘র সহকারী পরিচালক সুব্রত রায় বলেন, নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র একটা রেট আছে। সেই অনুযায়ী টোল আদায় করা হবে। কারণ, এখানে ইজারা দেওয়া আছে। আমাদের ইজারাদারদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, টোল আদায়ের সাথে সাথে স্লিপ দিতে হবে। এর বাইরে কোনো অনিয়ম হবে না। কেউ নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি টাকা আদায় করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, খাস কালেকশনের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ পেলে যথাযত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।