ঝালকাঠির রাজাপুরে প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের ভিতর দিয়ে রাস্তা নির্মান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ, এলাকাবাসীদের একাংশ, মাঠে খেলাধুলা করা শিক্ষার্থী এবং এলাকার শিশু কিশোরদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের সোনারগাঁও জে এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মো. জিয়া হাওলাদার ও তার সহযোগীরা এই রাস্তা নির্মান করেন। এ নিয়ে উক্ত স্কুল কর্তৃপক্ষ ও রাস্তার পক্ষের লোকজনের মধ্যে চড়ম উত্তেজনা বিরাজ করছে। জিয়া উপজেলার আরুয়া এলাকার মৃত মান্নান হাওলাদারের ছেলে ও সৌদি প্রবাসী।
স্থানীয় ছবুর খান, রাজু মোল্লা, রাকিব মোল্লা, মফেজ আলী জানায়, পাশাপাশি দুইটি স্কুল। একটি সোনারগাও জে এ কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়। অন্যটি ৫৬ নং আরুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুইটি স্কুলের একটি খেলার মাঠ এবং জমি দাতাও একজন ওয়াজেদ আলী খান। স্কুলের পিছনের বাসিন্দারা মাঠের মাঝ থেকে দীর্ঘদিন থেকে হাটাচলা করে আসছিল। তারা ঐ স্থান থেকে রাস্তা পাকা করতে চাইলে স্কুলের জমিদাতা ওয়াজেদ আলী খানের ভাতিজা ছরোয়ার খান নিজ খরচে স্কুলের বাহির থেকে গত ১০দিন পূর্বে একটি বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছে। কিন্তু প্রতিপক্ষরা স্কুলের বাহির থেকে রাস্তা মানতে নারাজ। তারা স্কুলের মাঠের মাঝ থেকে রাতের আধারে রাস্তা নির্মাণ করেন এবং এই রাস্তা রক্ষা করতে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে বাড়িতে বসে দেখাশুনাও করেন। তারা এই রাস্তা রক্ষার করতে মঙ্গলবার সকালে স্কুলের সামনে গ্রাম বাসীর ব্যানারে একটি মানববন্ধন করেন। বর্তমানে স্কুলের মাঠের মাঝ থেকে রাস্তা নেয়াকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি পুলিশের নজরে আসলে তারাও নজদারি করছে। স্কুলের মানেজিং কমিটির সভাপতিও মাঠের মাঝ থেকে রাস্তা নেয়ার পক্ষে সুপারিশ করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্কুল শিক্ষার্থী ইমন, শাহিন, রাহাত, জাকারিয়া জানায়, ‘এটি আমাদের এলাকায় একমাত্র খেলার মাঠ। স্কুলের খেলার মাঠে আমরা খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সময় টুর্ণামেন্ট পরিচালনা করি। বর্তমানে একটি মিনি ফুটবল টুর্ণামেন্ট পরিচালনা করার কথা থাকলেও মাঠের মাঝ থেকে জোড় করে রাস্তা নেয়ায় এখন আর খেলাধুলার কোন সুযোগ নেই। তাই খেলাধুলার জন্য আমরা মাঠ থেকে এই রাস্তা অপসারণ করে আগের মত মাঠ ফিরে পেতে চাই। তা না হলে আমাদের বয়সীদের মাঠ ছেড়ে মোবাইল এবং নেশায় আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ’
স্কুলের জমিদাতা ওয়াজেদ আলী খানের ভাতিজা ছরোয়ার খান জানান, স্থানীয় মানুষের চলাচলের কথা চিন্তা করে স্কুলের বাহির থেকে জায়গা ক্রয় করে একটি রাস্তা নির্মাণ করে দিয়েছি তারপরেও রাতের আধারে স্থানীয় প্রভাবশালীরা মাঠ নষ্ট করে রাস্তা নির্মাণ করেছে।
মাঠ নষ্ট করে রাস্তা নেয়ার পক্ষের স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাসির সিকদার জানায়, রাস্তাটি ৫৬ নং আরুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অংশে পরেছে। তারা রাস্তা নির্মাণ করতে বাধা দেয়নায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইসমাইল হোসেন জানান, দুইটি স্কুল একটি ভূ-খন্ডে আর দুই স্কুলের একটিই খেলাধুলার মাঠ। মাঠের মাঝ থেকে রাস্তা নিলে মাঠ দুই ভাগে বিভক্ত হবে। এতে খেলাধুলার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের সব সময় খেলাধুলা মুখী করতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা বেস্তে যাবে।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. গোলাম বারী খান বলেন, মাঠের মধ্য থেকে রাস্তা আমিও চাইনা। কিন্তু প্রাইমারি তাদের জায়গায় দেয়াল দিলে মাঠতো আর থাকলো না তখন রাস্তা দিলে অসুবিধা কি?
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আলম জানান, স্কুলের খেলার মাঠ নষ্ট করে রাস্তা করার কোন সুযোগ নেই । সরেজমিনে গিয়ে দেখে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি।