মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিরাজ সেন তরুন শুক্রবার (১৯ মে) সকাল ৬ টায় নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন৷ মৃত্যুকালে এক পুত্র ও এক কন্যাসন্তানসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।
শুক্রবার বিকাল আড়াইটায় পৌর শহীদমিনার প্রাঙ্গণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলী রাজিব মিঠুন, শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার সহ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও গার্ড অফ অর্নার প্রধান করেন। শেষে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে নিজ গ্ৰামের বাড়ি আশীদ্রোণে গ্রামের বাড়িতে শেষ কৃত্ত দাহ্য অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রীমঙ্গলের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার পক্ষপাতহীন স্পষ্ট বক্তব্য সমাজ পরিবর্তনের একটি উজ্জ্বল দিক-নির্দেশনা হয়ে থাকবে। শ্রীমঙ্গলবাসী তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।
উল্লেখ” বীর মুক্তিযোদ্ধা বিরাজ সেন তরুন জন্ম ৬ জানুয়ারি ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে। বরদাকান্ত সেন ও সুপ্রভা সেন-এর চার কন্যা ও দুই পুত্রসন্তানের মধ্যে তিনি কনিষ্ঠ।
তিনি পড়াশোনা করেছেন শ্রীমঙ্গলের চন্দ্রনাথ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং শ্রীমঙ্গল মহাবিদ্যালয়ে। স্কুলজীবন থেকে ছাত্ররাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন।
১৯৬৭-’৬৮ সনে মৌলভীবাজার মহকুমার শ্রেষ্ঠ স্কাউটকর্মীর যোগ্যতা অর্জন করেন। মুক্তমনা সংস্কৃতিসেবীদের সংগঠিত করেন জাগৃতী শিল্পীগোষ্ঠীর ঘরানায়। সত্তুরের দশকের গোড়ার দিকে শ্রীমঙ্গলে এ সংগঠনটি সাংস্কৃতিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। করিৎকর্মা কৃতীজন বিরাজ সেন তরুণ ৭১এর মুক্তিযুদ্ধের একজন নির্ভীক যোদ্ধা।
১৯৭৫ সালের পরবর্তীতে রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ৩২ বছর কানাডা প্রবাসী হয়ে জীবন যাপন শেষে দেশে ফেরেন ২০০৮ সালে। তবে সেখানে ক্ষান্ত হয়নি, নিজেকে আবারও মেলে ধরেন সামাজিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে। শ্রীমঙ্গল শহরের বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন সাধুবাবার থলিখ্যাত বধ্যভূমি (যেখানে ১৯৭১ সালে কয়েক হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করে পুঁতে রাখা হয়েছিল) সংরক্ষণ ও মর্যাদাদানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) নূরুল হুদা ও স্যাইয়িদ মুজীবুর রহমানসহ তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ‘বধ্যভূমি ৭১’ নামে এখন এটি সকল প্রজন্মের কাছে একটি স্মৃতিস্মারক। তাঁর ঘনিষ্ঠ সাহচর্য তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণীত করে।