স্টাফ রিপোটার : নেত্রকোনা বারহাট্টায় স্কুল থেকে সহপাঠীদের সাথে বাড়ি ফেরার পথে ব্যর্থ প্রেমিকের দাঁড়ালো অস্ত্রের আঘাতে মুক্তি রাণী বর্মন হত্যাকান্ডের মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার ২৪ ঘন্টার ভেতরে বুধবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে প্রেমনগর গ্রামের পাকা ধান খেত সংলগ্ন জঙ্গল থেকে ঘাতক কাউসাকে (১৮) গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত মুক্তি রানী উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুর গ্রামের নিখিল চন্দ্র বর্মনের মেয়ে। সে ছালিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও বারহাট্টা নারী প্রগতি সংঘের ইয়্যুথ গ্রুপের সদস্য ছিলেন। আর ঘাতক কাউসার মিয়া একই গ্রামের সামছু মিয়ার মিয়া।
কাউসারকে গ্রেফতারের দুই ঘন্টা আগে বারহাট্টা শহীদ মিনারের সামনের সড়কে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে প্রতিবাদী মানবন্ধন পালিত হয়। বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ, ইয়ুথ গ্রুপ, কমিউনিটি ফোরাম ও সর্বস্তরের নাগরিক সমাজের ব্যানারে এই মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহম্মদ মাঈনুল হক কাশেম, ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনূর আক্তার সায়লা, উদীচীর জেলা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও বারহাট্টা উপজেলা শাখার সভাপতি কান্তি রঞ্জন চন্দ সরকার, বাংলাদেশ নারী প্রগতির জেলা ব্যবস্থাপক মৃনাল কান্তি চক্রবর্তীসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সুশীল সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিবর্গ।
এ দিকে একইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কাউসারকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. হারুন অর রশিদ। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. লুৎফর রহমান, খালিয়াজুরী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলামসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের সদস্যবৃন্দসহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ভিকটিম মুক্তি রাণীকে দীর্ঘদিন যাবত প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল হত্যাকারী। ভিকটিম প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এই হত্যাকান্ড ঘটায় কাউসার। এ হত্যাকান্ড সংঘঠিত হওয়ার পর পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদের দিক নির্দেশনায় জেলা পুলিশ ও গোয়েন্দা শাখার সমন্বয়ে চারটি টিম বিভক্ত হয়ে ঘাতককে ধরতে কাজ শুরু করে। ঘটনার ২৪ ঘন্টার ভেতরে মূল হোতাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।
গত মঙ্গলবার দুপুর আড়াই দিকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মুক্তি রানীর পথরোধ করে দাঁড়ালো অস্ত্র দিয়ে মুক্তি রানীর মাথায় ও ঘাড়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে কাউসার। সহপাঠী ও স্থানীয়রা স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করে প্রথমে বারহাট্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। মমেক হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মুক্তিরানীকে মৃত ঘোষনা করেন।