ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছাটাই শুধু প্রয়োজন। বাকি কাজগুলো কেন যেন এমনিতেই হয়ে যায়। নীলফামারী সরকারী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক নুরুল করিম তেমনই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন এবার।
তিনি উদ্যোগ নেন নীলফামারী সদর এবং পাশের জলঢাকা উপজেলার মাদরাসাগুলোর গরীব এবং এতিম শিক্ষার্থীদের সাথে ইফতার করবেন। পুরো রমজান মাসে এই দুই উপজেলায় প্রায় ৪০টি মাদরাসায় অন্তত আড়াই হাজার শিক্ষার্থীকে ইফতার করাবেন তিনি।
এই মহতি উদ্যোগের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তার সহকর্মী, বন্ধু, বড় ভাইদের দেয়া দান-সহযোগীতা। এমনকি নাম না জানা অনেকে তাকে এই কাজে সহযোগিতা করেছেন।
নীলফামারী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নুরুল করিম শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায়ই বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন। শীতের সময় উত্তরবঙ্গের শীতার্ত দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করেন শীতের কাপড়। বন্যার সময় বিভিন্ন সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ান বন্যার্ত মানুষের পাশে। তার এসব মানবিক কর্মকাণ্ডে নানার পেশার মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
এবার সে সব সামাজিক কাজের অংশ হিসেবে এই রমজান মাসে ৪০টি মাদরাসায় প্রায় ২৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য ব্যবস্থা করেছেন ইফতারের। রমজান মাসের প্রতিদিন নীলফামারী সদর ও জলঢাকা উপজেলায় এক বা একাধিক মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের জন্য ইফতারের আয়োজন করেছেন। প্রতিদিনই তিনি তার কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিয়ে মাদরাসাগুলোতে শিক্ষার্থীদের সাথে ইফতারে অংশ নিয়েছেন।
রমজান মাসজুড়ে ইফতার আয়োজন প্রসঙ্গে নুরুল করিম বলেন, ‘মূলতঃ মনের আনন্দ থেকে নিজের অর্থে আমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ইফতার আয়োজন শুরু করি। ফেসবুকে যখন শিক্ষার্থীদের ইফতারের ছবি শেয়ার করি, সেগুলো দেখে দেশ-বিদেশে থাকা আমার বন্ধু, বড় ভাই, সহকর্মীরা টাকা পাঠিয়ে দিছেন ইফতার আয়োজনের জন্য।’
শিক্ষার্থীদের সাথে ইফতারের এই আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। তার ইফতার আয়োজনের এই কর্মকাণ্ড থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মাদরাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ইফতারের আয়োজন করেছেন।
ইফতার এর পাশাপাশি নুরুল করিম এবারের ঈদ-উল ফিতরে শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে নতুন কাপড় উপহার দিয়েছেন এবং ২০০’র অধিক পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে চাল, ডাল, সেমাই, চিনি পোলাওর চাল ও গুড়া দুধ বিতরণ করেন।
নুরুল করিম বলেন, ‘মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকাটা মানবিক দায়িত্ব মনে করি। ফলে আমার বন্ধু ও সহকর্মীদের সহায়তায় প্রতিবছরই এই কাজগুলো করে থাকি এবং এই কাজের মাধ্যমে কিছু মানুষ উপকৃত হয় দেখে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করি।