বকেয়া মজুরি হিসেবে চা শ্রমিকরা জনপ্রতি ১১ হাজার টাকা করে পাবেন। যেখানে পাবার কথা প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এই সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে চা শ্রমিকদের মাঝে। এই সিদ্ধান্তে খুশি নন মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ সহ বিভিন্ন চা বাগানের অনেক চা শ্রমিকরা।
গত বুধবার (১ মার্চ) রাতে রাজধানীর বিজয়নগর শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশীয় চা সংসদ (মালিকপক্ষ) এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের সাথে মতবিনিময় শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এ ঘোষণা দেন।
পরে রাতেই শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়, চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি থেকে পরিশোধ সংক্রান্ত বিষয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনে বাংলাদেশীয় চা সংসদ (মালিকপক্ষ) এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন (শ্রমিকপক্ষ) এর সাথে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান মতবিনিময় করেন। এরপর তিনি চা শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি থোক হিসেবে পরিশোধের জন্য জনপ্রতি ১১ হাজার টাকা নির্ধারণ করে ঘোষণা করেন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হিংগাজিয়া চা বাগান, লুহানী চা বাগান, লংলা চা বাগান, গাজিপুর চা বাগান, হলিছড়া চাগানের শ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা বলছেন, তাদের অনেকেরেই বকেয়া মজুরি ১১ হাজার টাকার বেশি আছে। প্রায় ৩০ হাজার প্রজন্ত পাবার কথা ছিলো । সেখানে মাত্র ১১ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। তাহলে আমাদের বাকি টাকা কই গেল? এমন সিধান্ত মানতে নারাজ চা শ্রমিকরা। এছাড়াও যেসব সেবা পাবার কথা বলা হয়েছে সেখানে বেশিরভাগ মিলেনা বলে জানান তারা।
বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালি সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুশি হওয়ার কারন নেই। আমার নিজেরই বকেয়া মজুরি ২৯ হাজার টাকা পাওনা আছে। আর পাচ্ছি মাত্র ১১ হাজার টাকা। বাকি ১৮ হাজার টাকা কি পাবো না? তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের দাবি আদায়ে আন্দোলনে নেমেছিলাম। সরকারের কাছে আমাদের দাবি তুলে ধরেছিলাম। সেই প্রেক্ষিতেই এই ১১ হাজার টাকা বকেয়া মজুরি দেয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তে আমদের সাধারণ চা শ্রমিকরা খুশি হবেন না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উপর আস্তা আছে, তিনি আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
এদিকে হবিগঞ্জের অনেক চা বাগান ১১ হাজার টাকার লাম্প সাম্প ঘোষণার দাবিতে চা জনগোষ্ঠী ভূমি অধিকার ছাত্র যুব আন্দোলনের মানববন্ধন।
৩০০০০ (ত্রিশ হাজার)টাকার ন্যায্য বকেয়া মজুরী (এরিয়ার ) দাবিতে ১১০০০ (এগারো হাজার) টাকার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দিচ্ছেনঃ চা নেত্রী খাইরুন আক্তার, আশীষ তন্তবায় বেবুল, সন্ধ্যা রানী ভৌমিক,ভজন ভৌমিক,বিরেন্দ্র কালিন্দী লস্কর পুর ভ্যালি, চান্দপুর চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ।
উল্লেখ্য;, গতবছর ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৫০ বৃদ্ধি করে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন। তবে শ্রমিকরা ২০২১ এর জানুয়ারী থেকে ২৭ আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত সময়ের জন্য বর্ধিত মজুরির বকেয়া দাবি জানিয়ে আসছিলেন।