টানা লোকসানের পর বর্তমানে পানের দাম বাড়তি থাকায় মৌলভীবাজারের খাসিয়া পানপুঞ্জির খাসিদের মধ্যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এসেছে। পুঞ্জিগুলোতে প্রতিদিন এখন কয়েক কোটি টাকার খাসি পান ক্রয়-বিক্রয় হয়ে আসছে। খাসিরা পূর্বের লোকসানের ঘাটতি কাটাতে সরকারি সহায়তার দাবি করছেন।
যুগ যুগ ধরে পাহাড়ে বসবাসকারি (আদিবাসি) সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী খাসিরা মূলত পাহাড়ের সন্তান। তাদের জীবিকার একমাত্র প্রধান উৎসই হচ্ছে পান চাষ (জুম)। অন্যান্য সাধারণ পানের চেয়ে এ পানের রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট। এটি গাঢ সবুজ ও খেতে খুবই ঝাঁঝাঁলো। দেশ-বিদেশে রয়েছে এ পানের প্রচুর চাহিদা।
তবে এ বছর উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে ফলন ভালো হলেও খাসিরা পানের ন্যায্য দাম পাচ্ছিলেন না। বাজারে সাধারণত এক কুড়ি পানের দাম ১৫শ’ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা। এ অবস্থায় এ পান মাত্র ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়ে আসছিলো। এতে একমাত্র আয়ের পথ কমে আসায় খাসিরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। শুধু তাই না- বাঙালি পান ব্যাপারীরাও ব্যবসায় লোকসান গুণতে থাকে। তবে শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে পানের দাম বাড়তি থাকায় খাসিয়া পান জুমগুলোতে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বর্তমানে এক কুড়ি পান দুই হাজার থেকে ৩৫শ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে জেলার সবকটি পানপুঞ্জি মিলে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার পান ক্রয়-বিক্রয় হয়ে আসছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার হোসেনাবাদ পুঞ্জি প্রধান (পুঞ্জির মন্ত্রী) ক্রীন প্রথাম খাসি এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহায়তার দাবি জানান। আর জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহ্সান জানিয়েছেন, জুম চাষিদের সহজ শর্তে কৃষিঋণ সহায়তার কথা।
সিলেট বিভাগে ৮৩ খাসিয়া পুঞ্জির মধ্যে ৭৩টি রয়েছে মৌলভীবাজার জেলায়। আর পান চাষের সাথে যুক্ত আছেন ২৫ হাজার খাসি শ্রমিক নারী ও পুরুষ।