মিয়া মোহাম্মদ ছিদ্দিক, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
স্বাধীনতার ৫১ বছর পার হলেও এখনও নির্মাণ করা হয়নি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার শিবনাথ সাহার বাজার সংলগ্ন কুড়িখাঁই নদীর উপর নির্মিত প্রাচীন জরাজীর্ণ ব্রিজটি। এরই মধ্যে ব্রিজের দুপাশের রেলিং ভেঙ্গে গেছে। খসে পড়েছে পিলারের আন্তরণ ও ইট। বেশ কয়েকবার জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্মর্কতাদের অবহিত করা হলেও হয়নি কোন ব্যবস্থা।স্থানে স্থানে ভেঙ্গে গেছে ব্র্রিজের পাটাতনের অংশ। ইতিমধ্যে নির্বাচনকালীন সময়ে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ব্রিজটি।এ অবস্থায় চলাচল নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন বোয়ালিয়া,নামা বোয়ালিয়া, তেলিচারা,কাহেতেরটেকী, ভাংনাদী, চারিয়া, দড়িচারিয়া,মাগুরা, কুড়িখাঁই, চাতল, মুমুরদিয়া, জোয়ারিয়া ও পিপুলিয়াসহ অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ। বিশেষ করে স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পড়েছে বেশি বিপাকে। এছাড়া ব্রিজের জীর্ণদশার কারণে ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহন নিয়ে দুর্ভোগের শেষ নেই।
এ রকম পরিস্থিতিতে জনস্বার্থ বিবেচনায় ব্রিজটি দ্রুত পুনঃনির্মাণের দাবিতে ২০ গ্রামের এলাকাবাসী ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি মুমুরদিয়া ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে আজ সকালে ব্রিজ এলাকায় পালন করা হয়েছে মানববন্ধন কর্মসূচি। কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন কয়েকশ’ এলাকাবাসী। গতকাল বেলা ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে সিপিবি মুমুরদিয়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি শেখ জমশেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আবদুর রহমান রুমী,সাবেক সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম,কটিয়াদী উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সেলিম উদ্দিন খান,সাধারণ সম্পাদক মস্তোফা কামাল নান্দু, এলাকাবাসীর পক্ষে এডভোকেট জয়নাল আবেদীন রানা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, ব্রিজটি কটিয়াদী পৌর এলাকার বোয়ালিয়া থেকে মুমুরদিয়া ইউনিয়নের শিবনাথ সাহার বাজার হয়ে কুড়িখাঁই শাহ শামছুদ্দিন সুলতান বুখারী (র.) মাজারে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। স্বাধীনতা পূর্ব সময়ে কুড়িখাই নদীর উপর ব্রিজটি নির্মাণ এর দাবি জানান। তারা আরো বলেন যুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনী স্থানীয় কিছু নিরীহ লোককে ধরে এনে ব্রিজের উপর দাঁড় করিয়ে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষা দূরে থাক দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছরেও ব্রিজটির কোন সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে ইতিহাসের সাক্ষী ব্রিজটি বর্তমানে খুব জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই ব্রিজের উপর দিয়েই এলাকার স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে। আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন,ব্রিজটি দ্রুত সাময়িক সংস্কার এবং স্থায়ীভাবে পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করা না হলে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে জনগণকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা.মোহাম্মদ মুশতাকুর রহমান জানান, ব্রীজ নির্মানের আর্থিক ও কারিগরি সক্ষমতা উপজেলা পরিষদের হাতে নেই। তবে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দ্রুুত এই ব্রীজটি নির্মানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।