যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। প্রথমে ১৮ জনের কথা বলা হলেও পরে জানা যায়, মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় ১৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে রাজধানী কিয়েভের পাশের শহর ব্রোভারিতে এ ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাস্থলের পাশে শিশুদের একটি স্কুল ছিল।
হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে মন্ত্রী নিহত হওয়ার পর শোক প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে তিনি এটিকে দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেননি। তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধের কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেওয়ার সময় জেলেনস্কি বলেন, ‘যুদ্ধের সময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে না। এটি যুদ্ধের ফল।’
ইউক্রেনের ৪২ বছর বয়সি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেনিস মোনাস্তিরস্কি ছাড়াও দেশটির উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র সচিব প্রাণ হারান।
এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনাটি নিছকই একটি দুর্ঘটনা। তবে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা এসবিইউ জানিয়েছে, এ দুর্ঘটনার পেছনে কোনো নাশকতা, প্রযুক্তিগত সমস্যা অথবা উড়ান বিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে কিনা সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে।
রাশিয়ার হামলা থেকে বাঁচতে ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বহনকারী হেলিকপ্টার খুবই কম উচ্চতা দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু এতেও ঝুঁকি থেকে যায়।
এদিকে নিহত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেনিস মোনাস্তিরস্কি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির খুবই কাছের লোক ছিলেন। দীর্ঘ সময় তিনি জেলেনস্কির পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।
গত বছর রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার শুরু থেকে জেলেনস্কির সঙ্গে ছিলেন তিনি। যুদ্ধকালীন ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত ও পুলিশি কার্যক্রম ভালোভাবেই তদারকি করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনি।
ইউক্রেনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দেনিস মোনাস্তিরস্কির মৃত্যুর বিষয়টি সরকারের সবস্তরে প্রভাব ফেলেছে। অনেকে এ দুর্ঘটনার খবর শুনে স্তব্ধ হয়ে যান।
ব্রোভারির স্থানীয় মানুষ জানান, এ দুর্ঘটনা ঘটেছে যুদ্ধের কারণেই। কারণ রাশিয়ার হামলায় সেখানে বিদ্যুৎ ছিল না। যে কারণে ভবনগুলোতে কোনো বাতি ছিল না। আর তাই হেলিকপ্টারের পাইলট ভবনটি দেখেননি।
সূত্রঃ বি বি সি