দেশে ফেরার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের থাকার জন্য বাসভবন এবং অফিস প্রস্তুত করেছে বিএনপি। রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে থাকবেন তিনি। তবে তিনি চাইলে এই বাড়িটির অদূরে ‘ফিরোজা’ নামের বাড়িটিতেও থাকতে পারবেন। ভাড়া করা এই বাড়িটিতে থাকেন তার মা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যিনি বর্তমানে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দেশে ফিরে তারেক রহমান মূলত অফিস করবেন গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে। এজন্য গুলশান-২-এর ৮৬ নম্বর সড়কের এই কার্যালয়টিও তার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় তৈরি করা হয়েছে আলাদা চেম্বারও। এ ছাড়া চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের অদূরে গুলশানে আরেকটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছে, যেখান থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। গুলশান-২-এর ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি নম্বরের এই নতুন কার্যালয়েও তারেক রহমানের জন্য একটি কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানেও অফিস করবেন তিনি। এর বাইরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা চেম্বার। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আলাদা চেম্বার রয়েছে। এখন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্যও চেম্বার করা হলো। মাঝেমধ্যে সেখানেও অফিস করবেন তারেক রহমান। বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কমিটির আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অভ্যর্থনা জানাবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এরপর সড়কপথে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তিনি। পথিমধ্যে তিনি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে, অর্থাৎ তিনশ ফিটে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছে বিএনপি। এরপর তিনি চলে যাবেন এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখান থেকে তারেক রহমান গুলশান অ্যাভিনিউয়ে ১৯৬নং বাসায় যাবেন, এই বাসায় তিনি থাকবেন।
ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডন যান তারেক রহমান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। গত ১২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করে বিএনপি।
জানা যায়, তারেক রহমান যে বাসভবনে উঠবেন, সেই গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িটি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পরে তার সহধর্মিণী খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারের মন্ত্রিসভা। মাস কয়েক আগে এ বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেন অন্তর্বর্তী সরকারের গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং রাজউক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু।
দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত ছায়াঘেরা সাদা রঙের একতলা বাড়িটির অভ্যন্তর ও বাহ্যিক পরিবেশ তারেক রহমানের থাকার উপযোগী করে সাজানো হয়েছে। নতুন আসবাবপত্রে সাজানো বাড়িটিতে তিন বেড, ড্রয়িং, ডাইনিং, লিভিং রুমসহ আধুনিক সব সুবিধা রয়েছে। বাড়ির সামনে এরই মধ্যে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সড়কের সামনে স্থাপন করা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। থাকছে পুলিশি নিরাপত্তাও।
