গাইবান্ধা: পৌষ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় জেঁকে বসেছে প্রচণ্ড শীত। গত কয়েকদিন ধরে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো ঝরছে ঘন কুয়াশা। আজ ২৪ ডিসেম্বর বুধবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (১২.১৫ মিনিট) সূর্যের দেখা মেলেনি। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানজিমুল হাসান বলেন , আজ ২৪ ডিসেম্বর দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্থানীয়রা জানান, দুপুরের পর সাময়িকভাবে সূর্যের দেখা মিললেও তাপমাত্রা খুব একটা বাড়ে না। হিমেল বাতাসের কারণে সারাদিনই শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষ, খেটে খাওয়া শ্রমজীবী, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের চালকরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, সকালে গাইবান্ধা শহরসহ আশপাশের গ্রামাঞ্চল ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন । রাস্তাঘাটে লোকজনের চলাচল ছিল কম। কুয়াশার কারণে ঢাকা রংপুর মহাসড়কে যানবাহন চলেছে ধীরগতিতে, অধিকাংশ গাড়িকেই হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। গাইবান্ধা পৌর এলাকার দিনমজুর খয়রুল ইসলাম বলেন,“ভোরে কাজের জন্য বের হতে খুব কষ্ট হয়। গরম কাপড় নেই, ঠান্ডায় শরীর কাঁপে।
কিন্তু কাজ না করলে তো পরিবার নিয়ে খাওয়া জোটে না।” অটোরিকশা চালক পরিমল রায় বলেন,“কুয়াশায় সামনে কিছুই পরিষ্কার দেখা যায় না। হাত-পা অবশ হয়ে আসে। আবার গাড়ি না চালালে সংসার চলে না। আগে দিনে ৫০০–৯৬০ টাকা আয় হতো, এখন ঠান্ডার কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। দিনে ৩০০–৪০০ টাকা আয় করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।” শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাইবান্ধার হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।
সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনই হাসপাতালে ভিড় করছেন শিশু ও বয়স্ক রোগীরা। গাইবান্ধা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. আসিফ আহমেদ বলেন, “শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত রোগে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। সবাইকে গরম কাপড় ব্যবহার, মাস্ক পরা এবং আগুন পোহানোর সময় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।” এদিকে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে রংপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস।
