ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন ইবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ ও সদস্য রাফিজ ও নুরউদ্দিন। গতকাল মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ১১ টার দিকে শাখা ছাত্রদলের সদস্য রাফিজ আহমেদের ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, ছাত্রউপদেষ্টা ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতিকে গালিগালাজ ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তারা।
জানা যায়, গতকাল বিজয় দিবস ও হলটির ২০১৮-১৯ ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভার আয়োজন করে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হল কর্তৃপক্ষ। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, ছাত্রউপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান ও প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিনসহ অন্যরা। তবে অনুষ্ঠান শেষ করতে দেরি করায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে এই প্রতিবাদে হলের সামনে অবস্থান নেন অভিযুক্তরা। এসময় হল থেকে উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের গাড়ি বের হওয়ার সময় রাফিজ আহমেদ তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লাইভে আসেন।
ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাফিজ আহমেদ ফেসবুক লাইভে বলেন, “রাত এখন বাজে ১১টা ০৬। এখন উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা হল থেকে প্রশাসনের ভিসি, ট্রেজারারের গাড়ি বের হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সব তাফসীরুল কারক মনোরঞ্জন করতেছে। এখন এখানে কোনো প্ড়াশোনার কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সব তাফসীরুল কারক মনোরঞ্জন করতেছে। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা হলে, যেখানে সাড়ে আটটার সময় প্রোগ্রাম হলে প্রশাসনের অনেক জ্বালা বেঁধে যায়, ওপেন কনসার্টে অনুমতি দিতে চায় না কিন্তু উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা হলে তারা ড্যান্স দেখতে চলে আসছে। সবই কর্তব্যব্যক্তি, সবই তো তাফসীরুল কারক।”
অধ্যাপক ড. জালাল হল থেকে বের হলে তাঁর উদ্দেশ্য বলেন, এই যে প্রফেসর ডক্টর জালাল স্যার, খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট, এইমাত্র ১১:১১ বাজে উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা হল থেকে মনোরঞ্জন করে বের হচ্ছেন। তিনি আবার সিন্ডিকেট মেম্বার। স্যার, খুবই মনোরঞ্জন করে, খুবই তৃপ্তি পাইছে মনে হচ্ছে। এখনো প্রক্টরেরদেখা পাচ্ছি না। তারা হয়তো এখনো মনোরঞ্জনে ব্যস্ত আছে। ১১:১৫-এর সময় আপনারা বুঝতে পারছেন যে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা সিদ্দিকা হলে মনোরঞ্জন চলছে এবং সেখানে প্রশাসনের উচ্চকর্তা ব্যক্তিসহ সবাই আছে।”
নুরউদ্দিন অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “জামাতি-বিএনপিকে আগে ধরতে হবে।” প্রক্টরকে উদ্দেশ্য করে নুরুদ্দিন বলেন “তারা এখনো রঙ্গলিলায় ব্যস্ত আছে।”
আহ্বায়ক সাহেদ বলেন,“এরা লুচ্ছামি চ*** বেড়াচ্ছে। আরেক সমুন্ধি কথায় কথায় আল্লাহর কিরা বলে। পাঁকা হুজুর! সোমবার-বৃহস্পতিবার রোজা রাখে। প্রক্টর স্যার লুচ্চামি বন্ধ করেন, আসেন গল্প করি। বউ রেখে লুচ্চামি করতে সুবিধা হয়! মানুষে মনে করে বউ আছে। প্রক্টর কই, প্রক্টর? প্রক্টরের সমস্যা হচ্ছিল ফুটবল মাঠের অনুষ্ঠানে? ছাত্র উপদেষ্টা কই? এরা সারাদিন হচ্ছে নামাজ কালাম রোজা পড়ে বেড়ায়, আর রাতের বেলায় লুচ্চুমি করে বেড়ায়!”
অধ্যাপক ড. জালাল উদ্দিন হল থেকে বের হন, তাকে উদ্দেশ্য করে সাহেদ বলেন, “এই সব শুয়োরের বাচ্চা। জালাল শুয়োরের বাচ্চা! জামায়াতি-বিএনপি শুয়োরের বাচ্চারা ।”
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ বলেন, “যেটা হয়েছে সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এর জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।”
