নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের কৃষকের মতো নেপালী কৃষকরাও খরা, বন্যা, বজ্রপাত, পোকার আক্রমণ, শিলাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, কোল্ডইনজুরিসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে ঠিকে থাকে। তাই কৃষক প্রতিনিয়ত তার প্রয়োজনে নানা অভিযোজন কৌশল গ্রহণ করেন।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) এসব বিষয়কে সমানে রেখে নেপালের একদল উন্নয়ন কর্মী দেখতে আসেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা উপজেলার সাধুপাড়া গ্রামের জনউন্নয়ন কেন্দ্রের ফসলের হাসপাতাল ও বিষমুক্ত গ্রামের কার্যক্রম।
নেপালের সোশাল ওয়ার্ক ইন্সটিটিউট এর ছয় সদস্যের দল সাধুপাড়া কৃষক দলের সাথে সাধুপাড়া জনউন্নয়ন কেন্দ্রের আয়োজনে এবং বারসিকের সহযোগিতায় এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন।
এতে উপস্থিত ছিলেন, বারসিকের পরিচালক সৈয়দ আলী বিশ্বাস, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমানসহ কৃষক সংগঠনের সদস্যবৃন্দ।
বাংলাদেশের কৃষককেরা বিষমুক্ত একটি গ্রাম গড়ে তুলার জন্য ফললের জৈববালাই নাশক তৈরী ফসলের চিকিৎসা করেন, বাড়িতে ভার্মিকম্পোস্ট তৈরী করে রাসায়নিকের পরিবর্তে ব্যবহার করছেন। গ্রামের গাছে পাখি রক্ষার জন্য কলসি বেঁধে দিয়েছেন, পাখির খাবারের জন্য জাম গাছ রোপন করছেন গত পাঁচ বছর ধরে। এলাকার জলবায়ু দুর্যোগগুলো তুলে ধরে এসব দুর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় যেসব অভিযোজন কৌশল ব্যবহার করে ঠিকে থাকা কথা নেপালের উন্নয়ন কর্মীদের সামনে তুলা হয় হয়।
অপরদিকে নেপালের কৃষকরা তাদের এলাকার জলবায়ু দুর্যোগ বাংলাদেশের কৃষকের কাছে তুলা ধরেন এবং এসব দুর্যোগে মোকবেলায় তাদের অভিযোজন কৌশলও বর্ণনা করা হয়।
আলোচনায় স্থানীয় জাতবৈচিত্র্য রক্ষা, খরাসহিষ্ণু ফসলের জাত, ধানের পাশাপাশি কম পানি খরচ হয় এমন খরাসহনশীল বা কম সময়ে উৎপাদিত ফসলের জাত- যেমন; মসল্লা,তৈল, ভুট্টা, ডাল ভারত ও নেপালের মতো ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর সাথে জলবণ্টন ও তথ্য আদান-প্রদানের জন্য আঞ্চলিক চুক্তি করা। উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিপূরণ এবং ‘জলবায়ু তহবিল’ আদায়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা তুলে ধরা হয়।
নেপালের উন্নয়ন কর্মী লক্ষী প্রসাদ টাটাল বলেন,”কৃষকের কৃষিকেন্দ্রিক সমস্যাগুলো একটি আন্ত:মহাদেশিয় সমস্যা, এটি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের একটি প্রতিচ্ছবি। এই মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণ, সুশীল সমাজ, বিজ্ঞানী এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। একটি টেকসই ও জলবায়ু-সহনশীল অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।”
