নিজস্বপ প্রেতিবেদক: বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন, সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ এবং আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গেজেট প্রকাশের দাবিতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদারের কাছে এই স্মারকলিপি হাতে তুলে দেন উপজেলা কর্মরত সরকারি কর্মচারী পরিষদের ব্যক্তিবর্গ।
পরিষদের নেতারা বলেন, ১১-২০ গ্রেডের প্রায় ১৩ লাখ সরকারি কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ বেতন-বৈষম্যের শিকার। সর্বনিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা আট হাজার ২৫০ টাকা বেতনে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবিক মর্যাদায় বেঁচে থাকতে পারছেন না। অন্যদিকে কর্মকর্তা পর্যায়ে বেতন-ভাতা, গাড়ি, বাসা, সুদমুক্ত ঋণসহ নানা সুযোগ-সুবিধা থাকলেও মাঠপর্যায়ের কর্মচারীরা এসব সুবিধা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত।
নেতারা অভিযোগ করেন, গঠিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিটি ১১-২০ গ্রেডের বেতন–বৈষম্য দূর করার কোনো উদ্যোগ না নিয়ে প্রধানত প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতি-বঞ্চিত কর্মকর্তাদের উন্নীত করার দিকে গুরুত্ব দিয়েছে। এমনকি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও ভুতাপেক্ষভাবে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এতে নিম্নবেতনভুক্ত কর্মচারীদের সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, একই বাজারমূল্যে জীবনযাপন করলেও ১-১০ গ্রেডে বেতন পার্থক্য ৬২ হাজার টাকা পর্যন্ত। অথচ ২০ থেকে ১১ গ্রেডে এই পার্থক্য মাত্র চার হাজার ২৫০ টাকা। এতে শ্রেণী-বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও সচিবালয়ের বাইরে অধিদপ্তর ও দপ্তরের কর্মচারীদের পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন হয়নি।
বৈষম্য দূর করতে পরিষদ যে দাবি জানিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল (অনুপাত ১:৪), ১৪ বা ১২ গ্রেডের অভিন্ন কাঠামো, সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পে-কমিশনের প্রতিবেদন, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গেজেট প্রকাশ, পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করে সচিবালয়ের বিধি অনুসরণ, মেডিকেল ভাতা দেড় হাজার থেকে পাঁচ হাজার, যাতায়াত ভাতা তিনশো থেকে তিন হাজার, টিফিন ভাতা দুইশো থেকে তিন হাজার, শিক্ষা সহায়ক ভাতা সন্তানপ্রতি পাঁচশো থেকে তিন হাজার, বাড়িভাড়া ভাতা ৪০% থেকে ৮০%, ঝুঁকি ভাতা মূল বেতনের ৩০%, বৈশাখী ভাতা ২০% থেকে ১০০%, বিজয় দিবস ভাতা চালু, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স ৬২ বছর।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্নবেতনভুক্ত কর্মচারীদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবার নিয়ে টানাপোড়েনে দিন কাটছে। তাই ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে ৯ম পে-স্কেলের দ্রুত বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।
পরিষদ নেতারা আশা প্রকাশ করেন, সরকারের সদিচ্ছা ও প্রধান উপদেষ্টার মানবিক উদ্যোগে এই বৈষম্যের অবসান হবে এবং কর্মচারীদের বহুদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
