নিজস্ব প্রতিবেদক: নারী ও জাতিগত সংখ্যাল্প জনগোষ্টীর প্রতি বিদ্বেষী মনোভাব পরিহার করে শান্তিপুর্ণ সহবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য আয়োজিত প্রচারাভিযানে বক্তাগণ বলেন- “কোন ধর্মেই নারীকে ছোট করে বা হেয় করে বিবেচনা করা হয়না। আমরা আমাদের ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে কিংবা পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে প্রায়শই নারীর বিরুদ্ধে মর্যাদা হানিকর বক্তব্যের মাধ্যমে নারীকে মানসিক ও শারিরীকভাবে বিপর্যস্থ করে থাকি।”
নারী ও জাতিগত সংখ্যাল্প জনগোষ্টীর বিরুদ্ধে ঘৃণ্য উক্তি বন্ধে শান্তিপূর্ণ সহবস্থানের ধারনা প্রসারে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বুধবার (২৬ নভেম্বর) বেসরকারি সংগঠন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উদ্যোগে নেত্রকোনা সরকারি মহিলা কলেজে আয়োজিত প্রচারাভিযানে আলোচকবৃন্দ ওই মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নেত্রকোনা কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মৃনাল কান্তি চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- নেত্রকোনা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিধান মিত্র।
মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নেত্রকোনা এন আকন্দ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল বাতেন। আলোচনা করেন সহযোগী অধ্যাপক মো. সাখাওয়াত হোসেন, মোবারক হোসেন, সহকারী অধ্যাপক মানসী দত্ত মৌমিতা, ওয়ালিউল্লাহ ও প্রভাষক মো. আবু সানিফ প্রমুখ।
এ কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন- বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উন্নয়ন কর্মকর্তা কল্পনা ঘোষ।
মুখ্য আলোচক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল বাতেন বলেন, ইসলাম ধর্মে কোথায়ও নারীকে ছোট করে দেখানো হয় নাই। পবিত্র বিদায় হজের ভাষণে নবীজী স্পষ্ট করে বলে গেছেন নারীদের উপর তোমরা ভালো ব্যবহার করবে। তাছাড়া ভিন্ন ধর্ম বা জাতিগোষ্ঠীর প্রতি কোন জুলুম বা জবরদস্তি না করার কথা ইসলাম ধর্মে বার বার বলা হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিধান মিত্র বলেন, আমাদের প্রচলিত কিছু শব্দ নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করে সেগুলো পরিহার করতে হবে। প্রকৃত বৈষ্যম দূর করতে হলে নারীর মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং দূর করার জন্য নারীকে সুশিক্ষিত হয়ে আন্তনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠতে হবে।
তিনি এ ধরনের আয়োজনের জন্য আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জানান।
সভায় অন্যান্য আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের সকল অর্জনে নারী -পুরুষ ,জাতি -ধর্ম নির্বিশেষে সকলেরই সমান অবদান ও অংশগ্রহণ রয়েছে। ৭১ এ মহান মুুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ এর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও নারী ও সকল পর্যায়ের মানুষের অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতেও নারীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
কিন্তু আমরা প্রায়শই দেখতে পাই নারী বা সংখ্যাল্প জাতিগোষ্টীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার এবং ঘৃন্য উক্তি নারীর মর্যাদাকে হেয় প্রতিপন্ন করছে। আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই অর্ধেক এর বেশি নারীকে শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে আর এ জন্য প্রয়োজন একটি নারী সহায়ক পরিবেশ।

