ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকাসহ নীলফামারীর ডিমলা পর্যন্ত ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। হঠাৎ কেঁপে ওঠা ভবন, দুলে ওঠা ফ্যান– ঘরের আসবাব এবং মানুষের আতঙ্কিত ছুটে বের হয়ে আসার দৃশ্য কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ভূমিকম্পটি স্থায়ী ছিল খুব বেশি সময় নয়, তবে অনুভূতির তীব্রতা ছিল স্পষ্ট। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৭।
উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর মাধবদী অঞ্চলে, যা রাজধানী ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় কম্পন দ্রুত ও স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়। অন্যদিকে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পটির তীব্রতা ৫ দশমিক ৭ এবং কেন্দ্র ছিল নরসিংদী এলাকায়। ঢাকায় কম্পন শুরু হতেই বিভিন্ন এলাকার মানুষ আতঙ্কে ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।
অনেকে অফিস, ফ্ল্যাট ও বাণিজ্যিক ভবন থেকে সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নিচে নেমে আসতে দেখা যায়। শহরের বিভিন্ন জায়গায় কয়েক সেকেন্ড ধরে টানা দুলুনি অনুভূত হয়। রাজধানীর বাইরে চাঁদপুর, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, বরিশাল, মৌলভীবাজার, পটুয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে। অনেক এলাকাতেই মানুষ আচমকা কেঁপে ওঠায় ভয় পেয়ে বাড়িঘর থেকে রাস্তায় বের হয়ে যান। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এই ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়।
বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় কম্পন টের পাওয়ার খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এখন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অনুভূত শক্তিশালী ভূমিকম্পে ৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকায় ৩ জন, নারায়ণগঞ্জে ১ জন এবং নরসিংদীতে ২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে।
এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকটি ভবন ও স্থাপনায় ফাটল দেখা গেছে। তবে ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল রাজধানীর কাছাকাছি হওয়ায় ভবিষ্যতে এমন ঘটনা মোকাবিলায় পরিকল্পনা, সচেতনতা ও ভবন নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝারি মাত্রার হলেও এ ধরনের অগভীর ভূমিকম্প দেশের অবকাঠামোগত ঝুঁকির বিষয়টিকে আবারও সামনে নিয়ে আসে।


