নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় বাংলা বিভাগ ও গবেষণা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ‘২৬তম প্রয়াণ দিবসে কবি সুফিয়া কামাল স্মরণানুষ্ঠান’। কবি সুফিয়া কামালের মানবতাবাদী চেতনা, নারী-অধিকার আন্দোলনে তাঁর অবদান এবং বাংলা সাহিত্যে তাঁর অগ্রণী ভূমিকা নতুনভাবে অনুধাবনের লক্ষ্যেই এই স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. খন্দকার মোহাম্মদ আশরাফুল মুনিম। তিনি বলেন, ‘সুফিয়া কামাল আমাদের সাংস্কৃতিক দীপ্তি, যাঁর সাহিত্য ও সংগ্রামী জীবন বাংলার মানবিক চেতনাকে প্রতিক্ষণে আলোকোজ্জ্বল রেখেছে।’
স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আনিছা পারভীন। তিনি বলেন, ‘সুফিয়া কামালের সাহিত্য আমাদের সামাজিক ন্যায়, নারীমুক্তি ও মানবিক অগ্রগতির প্রেরণা দেয়। তাঁর ভাবনা আজও সমান প্রাসঙ্গিক।’
স্মরণানুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন- সাঁঝের মায়া ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক ড. মোতাহার আখন্দ, আলোকচিত্রশিল্পী ও শিল্প-গবেষক সাহাদাত পারভেজ এবং নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের প্রভাষক মাহফুজা মাহবুব।
তাঁরা সুফিয়া কামালের সাহিত্য, নারীমুক্তি-আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা এবং মানবিক মূল্যবোধের ওপর তাঁর চিন্তার গভীরতা নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচকরা উল্লেখ করেন যে, সুফিয়া কামাল কেবল কবি নন- তিনি বাংলাদেশের সামাজিক রূপান্তরের এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব, যাঁর সাহস ও সৃজনশীলতা নতুন প্রজন্মকে প্রভাবিত করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্বরচিত প্রবন্ধ পাঠ করেন এম.এ শ্রেণির পূজা সরকার ও আজমিরী ইসলাম।
তাঁরা প্রবন্ধের মাধ্যমে সুফিয়া কামালের সাহিত্যিক অবদান ও মানবতাবাদী চিন্তাধারার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। কবিতা আবৃত্তি করেন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নিশাত আনজুম রাইসা।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী অধ্যাপক জনাব মো. আব্দুল হালিম।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সুফিয়া কামালের ভাষা মানবতার পক্ষে এক অদম্য কণ্ঠস্বর; তাঁর সাহিত্যকে গভীরভাবে পাঠ ও অনুধাবন করা আমাদের দায়িত্ব।’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক সামিয়া জাহান। স্মরণানুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
এই আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল কবি সুফিয়া কামালের সাহিত্য, জীবনদর্শন এবং সমাজচিন্তাকে নব প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবিক মূল্যবোধভিত্তিক বৌদ্ধিক পরিবেশকে আরও সমৃদ্ধ করা।
