নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে গত বছর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত ভারতে পলায়নকৃত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাট্রইব্যুনাল। এ রায়ে উল্লাস ও মিষ্টি বিতরন করেছে নেত্রকোনার জুলাই যোদ্ধারা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নেত্রকোনা পৌরশহরে মোক্তারপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন জুলাই চত্ত্বরে মিষ্টি বিতরন করেন জুলাই যোদ্ধারা।
এসময় গত বছরের জুলাই-আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১১তম সমন্বয়কারী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম সোহাগ বলেন, “এই রায়ের মাধ্যমে দেশে নজির স্থাপিত হয়েছে। যেই ব্যক্তি বা যে রাষ্ট্র প্রধান বা যেই সরকার প্রধান দেশের মধ্যে গণহত্যা করবে- তার মাথায় রাখতে হবে, দেশের ইতিহাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রীরও ফাঁসি হয়েছে। পাশাপাশি আজ থেকে আমাদের একটা নতুন যুদ্ধ ও সংগ্রাম তৈরি হবে ভারতের বিরুদ্ধে।”
প্রীতম সোহাগ আরো বলেন, “বাংলাদেশের সাথে কোন সম্পর্ক গড়তে হলে ভারতেকে অবশ্যই বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। বাংলাদেশের আইনে দন্ডপ্রাপ্ত একজন মৃত্যুদন্ডের আসামিকে দিল্লিতে বসিয়ে রেখে পালবে ও বিভিন্ন রকমের নাশকতা তৈরির চেষ্টা করবে, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভারতকে অবশ্যই বন্দি বিনিময় চুক্তি মানতে হবে। ভারত যদি বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করতে চায়- তাহলে তাদেরকে অবশ্যই হাসিনার মতো একটা স্বৈরাচারকে ফেরতে দিতে হবে।”
শরীরে ২৩ বুলেটবিদ্ধ জুলাই যোদ্ধা ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিওপি) সাবেক ছাত্র প্রকৌশলী সোহানুর রহমান বলেন, “বাবা ও স্বামীর দেশ বানাইয়া দেশটারে যে নৈরাজ্য শিখরে পৌঁছানো যাবে না- এটা আজকের রায়ের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। পরবর্তীতে যদি কোন রাষ্ট্র প্রধান, কোন রাজনৈতি কর্মী আবার কেউ স্বৈরাচার হবার চেষ্টা করে- আমরা এবার যেমন গেঁটি ধরে নামিয়ে ফেলছি, আরেকবার পুঁতে ফেলবো।”
প্রকৌশলী সোহান আরো বলেন, “আমিসহ অন্যান্যরা উত্তরাতে আহত হই। আহত অবস্থায় অনেকদিন চিকিৎসাধীন ছিলাম। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা যারা আহত ও নিহত পরিবার আছি- তাদের আত্মায় একটা তৃপ্তি প্রতিফলিত হয়েছে। এই রায়টা যখন কার্যকর হবে, আজকে যেমন মিষ্টি বিতরন হচ্ছে, তখন সারা বাংলাদেশে মিষ্টি বিতরনে হাহা-কার লেগে যাবে। মিষ্টি পাওয়া যাবে না- যখন শুধুমাত্র ফ্যাসিস্টদের রায় কার্যকর করা হবে।”
আজ (১৭ নভেম্বর) ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের সঙ্গে অন্য আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজস্বাক্ষী হওয়ায় পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন রাষ্ট্রপক্ষের রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন এবং নিজের দায় স্বীকার করেন।
