ইবি প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেছেন, প্রশাসনের শুরুতেই যারা সরাসরি মিছিলে অংশ নিয়ে গণহত্যাকে বৈধতা দিয়েছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছিলাম। অনেক দিন পরে হলেও প্রশাসন তালিকা দিয়েছে। কিন্তু আমরা অত্যন্ত হতাশ, প্রশাসন আমাদের আসা পূরন করতে পারে নাই। যারা গণহত্যায় জড়িত তাদের তালিকা সংক্ষিপ্ত, এতে পর্যাপ্ততা নেই। ৩৫ জুলাইয়ের মিছিলে শতাধিক শিক্ষক কর্মকর্তা ছিল কিন্তু তাদের নাম আসেনি। মিছিলের নেতাদের নাম আসেনি, ছাত্রলীগের নাম আসেনি। রাঘববোয়ালদের বাইরে রেখে যারা তুলনামূলক কম দোষী তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহে মধ্যে জুলাইবিরোধী সকলকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
রবিবার (২ নভেম্বর) জুলাই বিরোধী শক্তির আস্ফালনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে আমরা কখনোই না। কিন্তু অভ্যুত্থানের বিরোধী শক্তি শিক্ষার্থীদেরকে ম্যানিপুলেট করে
জুলাইবিরোধী কাজগুলো করানোর চেষ্টা করছে। আশা করছি যে এটি ধোপে টিকবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের আমরা যেটা আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা আরও স্ট্রেট হন এবং এ ধরনের আপনাদের দায়-দায়িত্ব যেহেতু নির্দিষ্ট কোনো দলের প্রতি না, সেক্ষেত্রে আপনাদের দায়-দায়িত্ব যেহেতু শহীদ এবং আমার আহত ভাই-বোনদের প্রতি। সেই ব্যাপার থেকে আপনারা শক্তিশালী ভূমিকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাখবে। শিক্ষকদের বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের আমাদের মুখোমুখি দাঁড় করার নীলনকশা করতে চাইলে আমাদের মুখোমুখি হতে হবে। বিভিন্নভাবে তাদের প্রভাবিত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের দুঃসাহস দেখাবেন না।
এছাড়া সমাবেশে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কতিপয় শিক্ষককে বহিষ্কৃত সিদ্ধান্তকে নাটক ও প্রহসন দাবি করে ছাত্রদল নেতা নূর উদ্দিন বলেন, প্রশাসন কতিপয় শিক্ষককে বহিষ্কার ও হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্রের ছাত্রত্ব বাতিল করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আরাফাতের নামকে বাদ দিয়েই তারা বাদবাকি চুনোপুঁটিদের বহিষ্কার করার যে নাটক, যে প্রহসন, সেই প্রহসনকে আমরা সে ঘৃণ্যাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য পালিয়ে যাওয়া যে প্রশাসন, সালামের যে প্রশাসন, প্রক্টর ছিলো, তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে হাতেগোনা কয়েকজন চুনোপুঁটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। আমজাদের মত যে কুলাঙ্গাররা জুলাই আন্দোলনকারীদের জঙ্গি হিসেবে আখ্যায়িত করে, সেই তাকে যখন বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হয় না, তখন আমাদের প্রশ্ন জাগে আপনারা কিসের বিনিময়ে, কত টাকার বিনিময়ে আপনারা এই বিচারের প্রহসন চালু করছেন? খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেই চুনোপুঁটি এসব নাটক বাদ দিয়ে যারা রাঘববোয়াল আছে অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা বর্তমান প্রশাসন আছে তাদেরকে দাঁত ভাঙা জবাব দেয়া হবে।
এদিন দুপুর দেড় টার দিকে ক্যাম্পাসের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা,আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট এ্যাকশন, লেগেছে রে লেগেছে ; রক্তে আগুন লেগেছে, দিয়েছি তো রক্ত; আরো দিবো রক্ত, আবু সাঈদ মুগ্ধ ; শেষ হয় নি যুদ্ধ, একটা একটা লীগ ধর; ধইরা ধইরা জেলে ভরসহ নানা স্লোগান দেন।
এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ সমন্বয়ক ইয়াসকিরুল কবীর সৌরভ, গোলাম রব্বানী, ছাত্রদল নেতা নূর উদ্দিন, রাফিজ, শিবির নেতা রায়হান নেজামীসহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
