ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আইন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শাহাজাহান মন্ডল এবং অধ্যাপক ড.রেবা মন্ডলকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (১ নভেম্বর) বেলা ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘যে শেখায় ন্যায় তারই হলো অন্যায়’ যে শেখায় সত্য তাকে কেন বরখাস্ত’ ক্লাসের শিক্ষক ক্লাসে চাই, শিক্ষক ছাড়া ক্লাস রুম শূন্য থাকবে’ ‘We want our teacher back,’ ‘Without them,’ ‘Law has no voice,’ ‘Education needs teacher, not punishment’ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা যায়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “আইন বিভাগ দীর্ঘদিন সেশনজটে ছিল। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় তা এখন কমে এসেছে। শাহজাহান মন্ডল ও রেবা মন্ডল সবসময়ই শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় অনেক শিক্ষার্থীকে ফর্ম ফিলাপে সহযোগিতা করতেন। আমাদের বিভাগে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষকদের শাস্তি পুনর্বিবেচনা করা হোক।”
শিক্ষার্থী হৃদয় বলেন, “তদন্ত কমিটি কতটুকু নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা ক্যাম্পাসে এখনও আওয়ামী মতাদর্শের অনেক শিক্ষক টিকে আছেন। শিক্ষক রাজনীতির জন্য যদি এ শিক্ষক, কর্মকর্তারা বহিষ্কার হতে পারেন, তাহলে বাকিরা পড়ে রইল কেন।”
মির্জা শাহরিয়ার বলেন, “জুলাই আন্দোলনের সময় আমি ১২ দিন জেলে ছিলাম। তখন আমাদের বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন রেবা মন্ডল এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন শাহজাহান মন্ডল। সে সময় আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট, তার স্বপক্ষে কোনও কাগজপত্র আমার কাছে ছিল না, সব মেসে ছিল।”
তিনি বলেন, “আমার আব্বু যখন বিশ্ববিদ্যালয় এসেছিলেন, তখন যত রকম সহযোগিতা করা যায়, সব করেছেন তারা। আন্দোলনের সময় আমাদের বিভাগ থেকে কাউকে যেতে নিষেধ করা বা বাধা প্রদান করা হয়নি। এ দুজন শিক্ষক সবসময় রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করেছেন। এ বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে আমরা আমাদের শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ফেরত চাই।”
অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল বলেন, “আমাদেরকে শোকজে বলা হলো মিছিল থেকে অশ্লীল গালিগালাজ ও মারধরের হুমকি দিয়েছেন। অথচ আমরা ঐ মিছিল বা র্যালিতে ছিলাম না। আমরা শোকজের জবাবেও বলেছি আমরা সেই মিছিলে ছিলাম না। শোকজের জবাব দেওয়ার পরেও এই বহিষ্কারাদেশ। তাহলে কি প্রশাসন তাদের স্টার্ন্ডে থাকতে পেরেছে?”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রদের আন্দোলন ছাত্ররা করবে এটা আমাদের স্টার্ন্ড । ছাত্ররা আন্দোলন করেছে আমরা কি কোথাও কখনো এর বিরোধিতা করেছি। এছাড়াও আইন বিভাগের মাহফুজ নামে এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের কোনো ছেলে মারধর করলে সেটা সমাধান করি এবং মাহফুজের কাছে মাফ চেয়ে নিতে বলি। আরেক শিক্ষার্থী মির্জা তাকে পুলিশ গ্রেফতার করলে আমি ও বিভাগের চেয়ারম্যান রেবা মন্ডল তাকে ছাড়িয়ে আনতে চেষ্টা করি।”
এবিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিরোধী বিতর্কিত ভুমিকার জন্য শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা আরো একটি কমিটি গঠন করবো। সেই কমিটি বিবেচনা করবে কাকে কতটুকু শাস্তি দেয়া যায়। তবে ফ্যাসিস্টের প্রশ্নে কোন ছাড় হবে না।”


