গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) হিসাবরক্ষক আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রায় তিন বছর আগে রংপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ দাখিল হলেও আজও গ্রেপ্তার হয়নি প্রধান আসামি আনিছুর রহমানসহ ৭ আসামি।
আদালত থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও তা এখনো কাগজেই সীমাবদ্ধ । মামলার সূত্রে জানা যায়,২০১৪ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আনিছুর রহমান গাইবান্ধা জেলা বিআরডিবি কার্যালয়ে হিসাবরক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এ সময়ে তিনি চারজন উপ-পরিচালকের স্বাক্ষর স্ক্যান করে জালিয়াতি করেন। তদন্তে এসব জালিয়াতির সত্যতা পায় দুদক ।
ওই সময় তিনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন,ভাতা,পেনশন ও কল্যাণ তহবিলের অর্থ থেকে মোট ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। তিনি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) গাইবান্ধা শাখায়, বিআরডিবি নামে একটি ব্যাংক হিসাব খুলে সেখানে এসব অর্থ লেনদেন করে প্রতারনার আশ্রয় নেন । ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারের বাজেটে, গাইবান্ধা সমন্বিত পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচি নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়।
প্রকল্পের আওতায় পল্লী বাজারের নামে ৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার স্থায়ী আমানত (এফডিআর), বিআরডিবি ব্যাংকে জমা রাখা হয়। কিন্তু একই বছরের মার্চে উপ-পরিচালক আব্দুস সবুর দায়িত্ব গ্রহণের পর দেখা যায়, আনিছুর রহমান ওই টাকা তার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নিয়েছেন। বিষয়টি, সন্দেহ হলে উপ-পরিচালক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই তদন্তেই আনিছুর রহমানের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা প্রকাশ পায়। এরপর বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিআরডিবির প্রধান কার্যালয় আরও একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে,যা আনিছুর রহমানের অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি নিশ্চিত করে কতৃপক্ষ।
ফলে ২০২৪ সালের ১৯ ডিসেম্বর আনিছুর রহমানকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদক অনুসন্ধান শেষে সত্যতা পেয়ে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে আনিছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে সাতজনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করে মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত সম্পন্ন করে দুদক আদালতে চূড়ান্ত চার্জশিট দাখিল করে। চলতি বছরের ২৭ আগস্ট আদালত ৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধা সদর থানায় সেই পরোয়ানা পৌঁছালেও আসামিরা এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহীনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, আসামি গ্রেপ্তারের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নজরদারি চলছে। আমরা খুব দ্রুতই আসামিকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান ।


