ইবি প্রতিনিধি:
হিন্দুত্ববাদী চক্র কর্তৃক মুসলিম নারীদের সম্ভ্রম নষ্ট, গাজীপুরে আশামনিকে ধর্ষণ,খতিব মহিবুল্লাহকে অপহরণ,চট্টগ্রামে আলিফ হত্যাসহ ইসকনের সব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। পরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিলে, ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে,’ ‘তুমিও জানো, আমিও জানি, ইসকন তুই হিন্দুস্তানি,’ ‘ইসকন তুই জঙ্গি, স্বৈরাচারের সঙ্গী,’ ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই,’ ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার,’ ‘সাবিলুনা সাবিলুনা,আল জিহাদ আল জিহাদ,’ ‘বদরের হাতিয়ার,গর্জে উঠুক আরেকবার,’ ‘বিচার বিচার বিচার চাই,আলিফ হত্যার বিচার চাই,’ ‘ইসকনের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না,’ ‘ভারতের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান,’ ‘দ্বীন ইসলাম, দ্বীন ইসলাম, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ,’ ‘আমরা সবাই রাসুল সেনা, ভয় করিনা বুলেট বোমা,’ ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও, লড়াই কর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম আশরাফ উদ্দিন খান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী।
কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম আশরাফ উদ্দিন খান বলেন, “এটা প্রত্যেকের সামনে দিবালোকের মতো স্পষ্ট ইসকন আরএসএস’র অঙ্গ সংগঠন। ইসকন এদেশে ধর্মপ্রচার করতেছেনা বরং তারা আরএসএস এর কর্মকান্ড এদেশে প্রচার করতেছে। তারা ধর্মের ছন্দবেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদকে প্রচার এবং প্রসারে মাঠে নেমেছে। গত ১৬ বছর ইসকন এদেশকে তাদের অভয়ারণ্য হিসেবে পেয়েছিল।
আমরা ইসকন নেতার মুখ থেকেই শুনেছি বিগত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা তাদেরকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার উত্তরার মতো জায়গায় জন্য দুই বিঘা জমি দিয়েছে। সেই আদর সোহাগে তারা এখানে বড় হইছে। আমাদের মুসলমানদের উপর তারা অস্ত্র ধরেছে। আমাদের মুসলমান মা-বোনদের ইজ্জত নিয়ে তারা তামাশা করছে। ইসকনের মত সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার সময়ের দাবি। ইসকনের ঠাঁই আমাদের এই বাংলাদেশের তৌহিদী জনতার ভূমিতে হতে পারে না।”
তিনি আরও বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে যেমন সিঙ্গাপুর আফগানিস্তানের মতো দেশে এই ইসকন নিষিদ্ধ। কিন্তু আমাদের এই মুসলিম অধ্যুষিত দেশে কিভাবে এই উগ্র সন্ত্রাসীরা আস্তানা করে বসেছে সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। ইসকন নিষিদ্ধ করা দুনিয়ার সকল বিবেকবান মানুষের দাবি। বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন থেকে বলা হয় ইসকন কোন হিন্দু সংগঠন নয় এটি একটি আরএসএস এর অঙ্গ সংগঠন। বরং এরা উগ্র হিন্দুত্ববাদ এর প্রচার-প্রসারের জন্য আদাজল খেয়ে নেমেছে। মুসলিম-হিন্দুদের মধ্যে যে সম্প্রীতির বন্ধনের সৌন্দর্যকে তারা নষ্ট করছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা দাবিতে দাবি জানাতে চাই অতি দ্রুত ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হোক।”
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন,“ইসকনকে সমর্থন করা মানে আরএসএস সমর্থন করা,আরএসএসকে সমর্থন করা মানে ভারতীয় জনতা পার্টিকে সমর্থন করা। বিজেপিকে সমর্থন করা মানে মোদিকে সমর্থন করা। মোদিকে সমর্থন করা মানে বাংলাদেশকে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগকে সমর্থন করা, আওয়ামী লীগকে সমর্থন করা মানে শেখ হাসিনাকে সমর্থন করা মানে, এদেশের দুই হাজার শহীদের মৃত্যুকে সমর্থন করা।”
তারা আরো বলেন, “৫ আগষ্টের পর বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ইসকন নামক এই সন্ত্রাসী সংগঠন উঠেপড়ে লেগেছে। ভারতীয় দালাল ইসকনকে অতিবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকন বিগত সময়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ করেছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় থেকে রুট লেভেল পর্যন্ত ইসকনকে সব জায়গায় বসানোর সুযোগ করে দিয়েছে। বর্তমানে প্রশাসনের বিভিন্ন দায়িত্বে ফ্যাসিস্টদের দোসর কিনা যেভাবে খতিয়ে দেখা হয় সেভাবে ইসকনের সদস্য কিনা খতিয়ে দেখতে হবে। ইন্টেরিম সরকারকে বলতে চাই হয় ইসকনকে নিষিদ্ধ করুন অথবা গদি ছেড়ে দিন। ইসকনের বিরুদ্ধে জিহাদ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
