ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বুধবার নরওয়ে সফর করেছেন। রাশিয়ার একের পর এক মারাত্মক হামলার মধ্যে কিয়েভের প্রতি সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে তার ঝটিকা সফরের এটি প্রথম ধাপ।
বুধবার ভোরবেলা রাশিয়ার সর্বশেষ হামলায় সাতজন নিহত এবং ইউক্রেন জুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়। কর্মকর্তাদের মতে, দেশটির পূর্বে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কিয়েভ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
রাশিয়ার প্রায় চার বছরের আগ্রাসনের অবসান ঘটানোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভেস্তে গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার বুদাপেস্টে শান্তি আলোচনার জন্য রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করার পরিকল্পনা বাতিল করে বলেছেন, তিনি ‘অকার্যকর’ বৈঠক চান না।
ইউক্রেনের একটি সূত্র এএফপি’কে জানিয়েছে, বুধবারের শুরুতে জেলেনস্কি নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস গাহর স্টোরের সাথে আলোচনার জন্য অসলো সফর করেন এবং পরে সুইডেন, ব্রাসেলস এবং লন্ডন সফর করবেন।
জেলেনস্কি সুইডেনে লিংকোপিং শহর পরিদর্শন করবেন।
রাশিয়া মঙ্গলবার শেষ থেকে বুধবার ভোরের মধ্যে ইউক্রেনে ৪০৫টি ড্রোন এবং ২৮টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে এসব ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগই প্রতিহত করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত হয়েছে।
– ‘জানালা ‘বিস্ফোরিত’ –
কিয়েভে এএফপি সাংবাদিকরা রাতে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এবং রাজধানীর ওপরে ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়তে দেখেছেন।
কিয়েভের বাসিন্দা মারিয়ানা গোরচেঙ্কো এএফপিকে বলেছেন, ‘আমার হাত এখনও কাঁপছে’।
তিনি বলেছেন, ‘আমি লাফিয়ে উঠেছিলাম, খুশি হয়েছিলাম যে আমার ছোট্টটি সেই ঘরে ছিল না যেখানে জানালাগুলো বিস্ফোরিত হয়েছিল’।
জেলেনস্কি বলেছেন, এই হামলাগুলো দেখে বুঝা যায় যে, রাশিয়া ‘যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট চাপে পড়েনি।’
জেলেনস্কি বলেছেন, পূর্ব খারকিভ অঞ্চলে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদ্ধারকারীরা ভবন থেকে শিশুদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
এর জানালা ভেঙে গেছে এবং সম্মুখভাগ আংশিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের মতে, দেশের জ্বালানি অবকাঠামোকেও টার্গেট করে এই হামলাগুলো চালানো হয়েছে।
এরফলে শীত মৌসুমে ইউক্রেন জুড়ে হাজার হাজার মানুষ তাপ এবং বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে।
রাশিয়া জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার বেসামরিক অবকাঠামোতে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ সামরিক বাহিনীকে সরবরাহকারী ইউক্রেনীয় জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়েছে।