মনিরুজ্জামান খান গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এক রোগাক্রান্ত গরুর মাংস কাটাকাটি করার পর ১১ জনের শরীরে ‘অ্যানথ্রাক্স রোগের’ উপসর্গ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দিবাকর। ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রাম। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফিজার রহমান বলেন, গত সোমবার তারা ওই গরুর মাংস কাটাকাটি করেন।
এর কিছু দিনের মধ্যেই তাদের শরীরে ফোসকা,পচন,চামড়ায় প্রদাহ ধরা দেয়,বিশেষ করে হাত,নাক, মুখ ও চোখে। কিছু রোগীর অবস্থা গুরুতর বলে জানায় তথ্য। তার মধ্যে মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহবুর রহমান বর্তমানে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মাহবুর রহমান বলেন, গরুটি ১০–১২ দিন আগে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়,কিন্তু গরুটির আরও অবনতি ঘটলে। শেষ পর্যন্ত সোমবার গরুটি জবাই করি। এরপর যারা মাংস কাটাকাটি করেছিল, তাদের শরীরে ফোসকা ওঠে ও পচন দেখা দেয়।
এই রোগের সন্দেহভাজন রোগীদের গাইবান্ধা রাবেয়া ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মঞ্জুরুল করিম প্রিন্স বলেন, “অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে দ্রুত সুস্থ হওয়া সম্ভব।” উপজেলা প্রাণিসম্পদ ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডা. মো. মোজাম্মেল হক জানান, সম্প্রতি সীমান্তবর্তী পীরগাছা উপজেলায় গরু ও ছাগলে অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ওই এলাকায় জুলাই–অগাস্টে দুইটি গরু মারা গেছেন।
এখন সেই সংক্রমণ সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি আরও জানান, কিশামত সদর গ্রামে সব গবাদি পশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সর্বানন্দ, বামনডাঙ্গা, তারাপুর ও সুন্দরগঞ্জ পৌর এলাকায় টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাকি এলাকায় টিকা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিবাকর বসাক বলেন, “হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে আসা ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে রোগতত্ত্ব ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর-কে জানানো হয়েছে। অ্যানথ্রাক্স সাধারণত পশু থেকে মানুষে ছড়ায়’ তবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না।