রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)
ভারতীয় সীমান্তসংলগ্ন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিকভাবে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। নদীর পানি হঠাৎ বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছে গেলে আশপাশের জনপদে দেখা দেয় মহাবিপর্যয়ের আশঙ্কা।
ঠিক এমন সংকট মুহূর্তে, রবিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রংপুর ব্যাটালিয়ন (৫১ বিজিবি) দ্রুত মাঠে নামে। উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালীগঞ্জ বিওপি ক্যাম্পসংলগ্ন তিস্তা বাঁধের একটি অংশ ভাঙনের মুখে পড়লে ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আলদীনের নির্দেশে শুরু হয় জরুরি বাঁধ রক্ষার অভিযান।
বিজিবির জওয়ানরা স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কোমর-সমান স্রোতের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও বালির বস্তা ফেলে বাঁধের দুর্বল অংশে মেরামতের কাজ শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টার টানা প্রচেষ্টায় তারা বাঁধের ভাঙন রোধে সফল হন। ফলে রক্ষা পায় হাজারো মানুষের বসতবাড়ি, ফসলি জমি, গবাদিপশু ও বিভিন্ন স্থাপনা।
স্থানীয়দের ভাষায়, “বাঁধটি ভেঙে গেলে এক নিমিষেই অন্তত ১০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যেত। বিজিবির তৎপরতায় আমরা বেঁচে গেছি।”
অভিযান শেষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আলদীন বলেন, “মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষা করা আমাদের প্রথম দায়িত্ব। বিপদের খবর পাওয়ামাত্র আমরা ‘জিরো আওয়ার অ্যাকশন’ নেই। ৫১ বিজিবির সদস্যদের সহযোগিতায় বাঁধ রক্ষা অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিজিবি শুধু সীমান্ত রক্ষী নয়, বরং মানুষের রক্ষাকবচ হিসেবেও কাজ করছে। তিস্তার তীরে আমরা এক মানবিক দেয়াল গড়ে তুলেছি।”
বাঁধ রক্ষা পাওয়ায় এলাকায় এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন স্থানীয়রা। পশ্চিম ছাতনাই এলাকার কৃষক মজিদ মিয়া বলেন, “সেদিন পানির তোড়ে সব শেষ হয়ে যেত। বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার ও তাঁর দলের সাহসিকতায় আমরা আজ ঘরে ফিরেছি। তাঁদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।”
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাঁধে আপাত স্থিতি ফিরলেও তারা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছেন এবং সম্ভাব্য যে কোনো বিপদের জন্য প্রস্তুত আছেন।