দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি :
কেন্দ্রীয় বিএনপি আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, যেকোনো মানুষের হাত কাটলে যে রক্ত বের হয়, তার রং লাল। সেই রক্তে লেখা থাকে না কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে খ্রিস্টান। তাই আমাদের মনে রাখতে হবে, রক্তের লাল যেমন সবার এক, তেমনি ধর্ম যার যার বাংলাদেশ আমাদের সবার।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌর শহরের দশভূজা বাড়ি পূজা মণ্ডপে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের এই দুর্গাপুর সারা বাংলাদেশের মধ্যে অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের একটি উপজেলা। এখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, গারো, হাজংসহ নানা ধর্ম-বর্ণের মানুষ সবাইকে এক করে নিয়ে আমরা একটি বাগানের মতো এই অঞ্চলে বসবাস করছি।
এ সম্প্রীতি অটুট রাখতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে। আমরা বিএনপি সংবিধানের আলোকে সব ধর্মের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। সংবিধানে বলা আছে দেশের মালিক জনগণ সেখানে কিন্তু বলা হয়নি কে সংখ্যালঘু, কে সংখ্যাগুরু। আমি মনে করি, এই দুটি শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয়। আমরা সকলে বাংলাদেশি।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কুমারী পূজার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, কুমারী পূজার প্রথা চালু হয়েছিল অশুরা নামের এক অসুর বধের উদ্দেশ্যে। পরবর্তীতে স্বামী বিবেকানন্দ ১৯০১ সালে কলকাতায় কুমারী পূজার প্রচলন করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল নারী ক্ষমতায়ন, সমাজে নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও নারীর প্রতি শ্রদ্ধা জাগ্রত করা। তিনি আরও বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তখন তিনি নারী শিক্ষাকে অবৈতনিক করেছিলেন।
আগামী দিনে নারীর দুই হাতকে কীভাবে কর্মী শক্তিতে রূপান্তর করা যায়, সে প্রচেষ্টা আমাদের রয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানও এ বিষয়ে গবেষণা করছেন। আগামী দিনে যদি আপনাদের দ্বারা নির্বাচিত হতে পারি নারীর শক্তিকে স্বামী বিবেকানন্দ যেভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন অশুরা কে বধ করার জন্য নারীর শক্তিকে আমরা কাজে লাগাবো বাংলাদেশ গড়ার জন্য।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মানেশ চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু সরকার বাবুল, উপজেলা পূজা উদযাপন ফ্রন্ট কমিটির আহ্বায়ক শুভেন্দু সরকার পিন্টু, সদস্য সচিব বিদ্যুৎ সরকার, কালীবাড়ি মন্দির কমিটির সভাপতি রনজিত সেন, দশভুজা মন্দির কমিটির সভাপতি ধীরেশ পত্রনবীশ, রামকৃষ্ণ আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক প্রভাত সাহা, পৌর ফ্রন্টের আহ্বায়ক সুবল দে, পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুরঞ্জন পণ্ডিতসহ উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন বিএনপি নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। আলোচনা শেষে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের অর্থায়নে দুর্গাপুর উপজেলার ৬২টি পূজা মণ্ডপে মিষ্টি ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়।