রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পলাশবাড়ীতে অবস্থিত একটি প্রাচীন মন্দির ও এর সংলগ্ন ২১ শতাংশ জমিকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মের ব্রহ্মচারী ও হরিচারী সম্প্রদায়ের মধ্যে চলমান বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। হরিচারীদের মূর্তিপূজা বা আকারের পূজা পরিচালনার উদ্যোগের বিরুদ্ধে ব্রহ্মচারীদের আপত্তি এই সংঘাতের মূল কারণ।
আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় সিনিয়র সহকারী জজ মো. ইমরান সরজমিন তদন্ত পরিচালনা করেছেন। আদালত ইতিমধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। ব্রহ্মচারী সম্প্রদায়ের দাবি, ওই মন্দির ও জমি তাদের এবং পূর্বপুরুষদের দানপ্রাপ্ত এই জমিতে তারা নিরাকার পূজা-পার্বণ পরিচালনা করে আসছিলেন।
তবে, গত কয়েক বছর ধরে হরিচারী সম্প্রদায় ওই মন্দিরে মূর্তিপূজা শুরু করেছে, যা ব্রহ্মচারীদের ধর্মীয় অনুশীলনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। হরিচারীদের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পশ্চিম পলাশবাড়ী মন্দির পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মিলন সেন, যিনি সাবেক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ব্রহ্মচারীরা অভিযোগ করেছেন, মিলন সেন জোরপূর্বক এই মূর্তিপূজা চালু করেছেন, যা তাদের ধর্মীয় অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ।
গত বছর হরিচারীদের গোপাল পূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে, যেখানে মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনায় উভয়পক্ষ থেকে মামলা-মোকদ্দমা দায়ের হয়, যা এখনও আদালতে চলমান। চলতি বছরে হরিচারীরা পুনরায় মূর্তি নির্মাণ শুরু করলে ব্রহ্মচারী গ্রুপের সভাপতি রঞ্জন কুমার আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত ১৪৪ ধারা জারি করে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।
আজ সকালে জজ মো. ইমরান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। হরিচারীরা দাবি করছেন, তারা সনাতন ধর্মীয় ঐতিহ্য অনুসরণ করে মূর্তিপূজা পরিচালনা করছেন। আদালতের তদন্তের পরবর্তী শুনানিতে এই মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, যা এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক জানান, স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক রয়েছে। উভয়পক্ষ নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকলেও আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।