দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল না থাকায় পাঁচ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে একশো শয্যার নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে কাঙ্খিত সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন হাওরপাড়ের প্রায় সোয়া দুই লাখ মানুষজন। চিকিৎসক-সংকট, ল্যাব টেকনিশিয়ান ও সনো-লজিষ্ট পর্যাপ্ত না থাকায় হাসপাতালে আসা রোগীদের রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ছুটতে হচ্ছে বেসরকারি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে। যেতে হচ্ছে জেলা সদরসহ বিভাগীয় শহরে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবা প্রত্যাশী রোগীরা।

মোহনগঞ্জ উপজেলা একশো শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যার জনবল কাঠামোও নেই। হাসপাতালে কাগজে-কলমে ১৭ জন কর্মরত চিকিৎসকের মধ্যে পঁঅচ জন চিকিৎসক রয়েছে। এর মধ্যে ১১ বছর ধরে একজন এবং দুই বছর ধরে অপর চিকিৎসক হাসপাতালে আসছেন না। অন্যদিকে এক্সরে (রেডিওগ্রাফার) টেকনিশিয়ানের পদ অনেক দিন ধরেই শূন্য। হাসপাতালে এক্স-রে হয় না। ল্যাবের টেকনোলজিস্টের পদ শূন্য।

জানা যায়, প্রায় সোয়া দুই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য মোহনগঞ্জের ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ২০২৩ সালে একশো শয্যায় উন্নীত করা হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা প্রতিদিন বহির্বিভাগে সাড়ে তিন শতাধিক রোগী দেখছেন, ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। কিন্তু এক্সরেসহ কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হলেই রোগীদের স্থানীয় বেসরকারি ডায়গনস্টিক সেন্টারে যেতে হচ্ছে। অনেক দিন অব্যবহৃত থেকে পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতি অকেজো হয়ে পড়ছে। হাসপাতালে চিকিৎসকের ১৯টি পদের মধ্যে ১৪টি পদই শূন্য। শূন্য পদগুলোর মধ্যে আছে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন)।

আরো জানা যায়, মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডা. সঞ্জীব দত্ত চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ধর্মপাশা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ডা. মো. মারুফ-উল-আলম তালুকদার একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে খালিয়াজুরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বদলী হন। ২০১৪ সালের ১ অক্টোবর চিকিৎসক শারমিন সাত্তার এবং ২০২৩ সালের ৩ জুন চিকিৎসক কাউসার জাহান ঐশী অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত আছেন। তারা কোথায় আছেন স্বাস্থ্য বিভাগ জানে না। তাছাড়া তারা বেতন-ভাতাদি ও নিতে আসছেন না। একইভাবে ২০১৪ সালের জুন মাসে জুনিয়র কনসালটেন্ট পদে চিকিৎসক আব্দুল হালিম যোগদান করেন। তিনি যেদিন যোগদান করেন- সেদিনই ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেষণে চলে যান।

এছাড়াও মেডিকেল অফিসার পদে চিকিৎসক মোশারফ হোসেন যোগদান করেন। তিনিও ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে প্রেষণে চলে যান। এভাবেই ২০২৪ সালে চিকিৎসক বাকি বিল্লাহ জুলাই ফাউন্ডেশনে চলে যান। ফলে কাগজে-কলমে তারা মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত থাকায় পদ শূন্য দেখানো যাচ্ছে না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্স সচল আছে। অন্যটির ড্রাইভার না থাকায় অচল হয়ে আছে, আরেকটি মেরামতের অযোগ্য। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিনটি অনেক দিন থেকেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এক্সরে পরিচালনার জন্য টেকনিশিয়ান পদ দীর্ঘদিন থেকে শূন্য। সচল না থাকায় অকেজো হয়ে পড়েছে এক্সরে যন্ত্র। এখানে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও নেই কোন সনোলজিষ্ট। যার কারনে এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম এখান হয় না।

একই অবস্থা ল্যাবের। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের একটি পদ প্রায় অনেকদিন ধরে শূন্য। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারটিও (ওটি) সচল নেই। চিকিৎসক না থাকায় এই হাসপাতালে কোনো অস্ত্রোপচার হচ্ছে না। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) পদটিও এক বছর ধরে খালি। ভারপ্রাপ্ত আরএমও হিসেবে চিকিৎসক জান্নাতুল নেছা চাঁদনি দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে কনসালটেন্ট, চিকিৎসক, স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৬৫টি পদ শূন্য রয়েছে।

মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে যে চিত্র দেখা গেছে, পৌরশহরের দৌলতপুর গ্রামের দিনমজুর রঞ্জন সরকার (৪৫) পায়ের আঘাতজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসক দেখাতে এসেছিলেন। হাসপাতালে কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ নেই। চিকিৎসক এক্সরে করাতে বলেছেন। হাসপাতালে এক্সরে করতে না পারায় তিনি ময়মনসিংহ চলে যান।

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালের ওষধসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম পাচ্ছে না তারা। টয়লেটের অবস্থা খুবই খারাপ। দুর্গন্ধে অতিষ্ট রোগীরা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অভিযোগ করেন সব ধরনের ওষধ বাহির থেকে কিনে নিতে হয়। তারা জ্বর ও স্যালাইন ছাড়া কোন ওষধ হাসপাতাল থেকে দেয়া হয় না।

মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মোমেনুল ইসলাম জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব চালিয়ে নিচ্ছি, চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। বিভিন্ন শূন্য পদের চাহিদা বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version