গাইবান্ধাঃ
পরিবারের হালধরতে জীবিকার তাগিদে এসএসসি দাখিল পাস করার পর ইতি টানতে হয় গাইবান্ধার মহসিন সরকার মিঠুনকে,একমাত্র উপার্জন ক্ষমতা তার বাবা ষ্টক করে প্যারালাইসেস আক্রান্ত হয়ে বিছানায় পরে আছে। তাই আর ইচ্ছে থাকলেও পড়াশোনা না করে সংসার হাল ধরতে হয় থাকে,উপার্জনের জন্য পারি জমান ঢাকা গাজীপুর সখিপুর। এরপর গত ৫ আগস্টের কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকা গাজীপুর সখিপুর অংশ নেয় মহসিন সরকার মিঠুন।
আনছার একাডেমির সামনে প্রায় ৩০০ উপর গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকে। হাজার হাজার জনতা তার উপর দিয়ে মিছিল করে চলে যায়। প্রায় দু ঘন্টা পরে থাকার পর ফোন দিয়ে পরিচিত লোককে ডাকার পরেই অচেতন হয়ে পরে মহসিন । এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গনস্বাস্থ্য হাসপাতালে দু দফায় চিকিৎসা নিয়ে গুলি বের করলেও, তার শরীর ভিতর থেকে সব গুলি বের করা সম্ভব হয়নি। পরে একটু সুস্থ হলে সে বাড়ি চলে আসে।
১ বছর শরীরে গুলি নিয়ে বয়ে বেড়ানো মহসিন টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেনি।হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।পরে ডাক্তার এক্সরে রিপোর্টে দেখতে পায় তার শরীর ভিতর অগণিত গুলি রয়ে গেছে। গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের (আরএমও) ডা.আসিফ জানিয়েছেন,মহসিন সরকার মিঠুনের দ্রুত গুলি বের না করলে ক্যান্সারে পরিনত হবে।
আর এখানে কোন চিকিৎসা নেই ওকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশন করে কয়েক ধাপে গুলি বের করতে হবে না হলে ওকে বাঁচানো যাবে না। বলছিলাম গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের তালুকঘোড়াবান্ধা (বালুখোলা) গ্রামের নুরআলম সরকার ছেলে মহসিন সরকার মিঠুন এর কথা । দীর্ঘ এক বছর পরও তিনি সুস্থ হতে পারেননি এবং এখনও তার শরীরের ভিতর অগণিত গুলি রয়ে গেছে। ক্ষতচিহ্ন নিয়ে যন্ত্রণায় ভুগছেন। এরপরেও তার নাম ‘জুলাই যোদ্ধা’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
৫ কেজির বেশি কোনো ভারি জিনিস বহন করতে পারবেন না এবং দীর্ঘ সময় বিশ্রামে থাকতে হবে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে তিনি ও তার বাবা ষ্টক করে প্যারালাইসেস আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা ব্যয়ে ও ৬ বছরের ছোট ভাইসহ জীবিকার খরচ চালাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন পরিবারটি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন,আন্দোলনের প্রকৃত যোদ্ধাদের বাদ দিয়ে তালিকায় অনেক অনুপস্থিত ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গাইবান্ধা জেলার একাধিক বাসিন্দা ও রাজনৈতিক কর্মীরা দাবি করেছেন, মহসিন সরকারের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহম্মদ বলেন, যাদের নাম এখনও অন্তর্ভুক্ত হয়নি, তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে তালিকায় নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ পর্যন্ত মহসিন সরকার মিঠুন মাত্র ১০ হাজা টাকা সহায়তা পেয়েছেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে। এক বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি এখনও ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পাননি। তাই তার দ্রুত ব্যবস্থা করা হোক দাবী এলাকাবাসীর।