ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ( ইবি) সংস্কারের দাবিতে ‘ইবি সংস্কার আন্দোলন’-এর ব্যানারে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এই মানববন্ধন করে তারা। এসময় পূর্বঘোষিত ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে, “আমরা আশ্বাসে নই বাস্তবায়নে বিশ্বাসী, ফ্যাসিবাদের বিচার চাই নিপীড়নের হিসাব চাই, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই বহিরাগত মুক্ত পরিবেশ চাই, শিক্ষার্থীদের ১৫ দফা দাবি অবিলম্বে মানতে হবে, চিকিৎসায় অবহেলা নয় মেডিক্যালে পর্যাপ্ত ওষুধ চাই, ছাত্রী কমনরুম ফেরত চাই, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চাই, লক্কর ঝক্কর বাস আর নয়, নিজস্ব ফিটনেসযুক্ত বাস চাই, এনালগের শিকল ভাঙ্গো ডিজিটাল ক্যাম্পাস গড়, শিক্ষক সংকট দূর কর, সেশনজট মুক্ত কর, ছাত্র সংসদ গঠন কর, শিক্ষার্থীদের অধিকার নিশ্চিত কর, হলের খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত কর, সাজিদের রক্ত বৃথা নয়, খুনিদের বিচার চাই”সহ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাই পরবর্তী সময়ে যেরকম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আমরা কল্পনা করেছিলাম সেরকম অবস্থানে দেখতে পাচ্ছি না। সাজিদ হত্যার তদন্ত করে এখনো খুনীদের বিচার নিশ্চিত করা হলো না। তাহলে কিভাবে এই ক্যাম্পাসকে নিরাপদ বলতে পারি? এই রকম পরিস্থিতিতে যেখানে ছেলে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয়, সেখানে মেয়ে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ অনুভব করবে! অনেক বিভাগে সেশনজট রয়েছে, কেউ কেউ সঠিক সময়ে পড়াশোনা শেষ করে চলে গেলেও অন্যরা দুই-তিন বছর বেশি সময় থাকতেছে। এজন্য অনেকেই চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে। এছাড়াও ছাত্রীদের কমনরুম নিশ্চিত করতে হবে।’
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী খন্দকার আবু সায়েম বলেন, আমাদের ১৫ দফা দাবি অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাস্তবায়ন করে দেখা যায় এটাই আমরা চাচ্ছি। এর আগে যারাই দাবি দাওয়া দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সবাইকে আশ্বাস দিয়েই পাঠিয়ে দিয়েছে। আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রশাসন আমাদেরকেও দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। আমরা জানতে চাই এই দ্রুত সময়টা কবে? ৫ আগস্টের পরে একটি বছর হয়ে গেল সেই দ্রুত সময়টা কখনো তাৎক্ষণিক সময়ে আসতে পারল না। এটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক।”
উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের কার্যালয়ে ১৫ দফা সংবলিত স্মারক লিপি জমা দেন তারা। শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ — সেশনজট নিরসন, সাজিদ হত্যার বিচার ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ছাত্র সংসদ গঠন, ডিজিটালাইজেশন, আবাসন সংকট নিরসন, চিকিৎসা সেবার উন্নয়ন, খাবারের মান বৃদ্ধি, ফ্যাসিবাদী দোসরদের বিচার, পরিবহন সংকট দূরীকরণ, সাপের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণ, প্রতিটি বিভাগে মানসম্মত ছাত্রী কমনরুম নিশ্চিত করা, প্রত্যেক বিভাগ ও হলে ফার্স্ট এইড বক্স রাখা, শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা ও শিক্ষার্থীদের জন্য সাইবার বুলিং বন্ধে নীতিমালা প্রণয়ন করা।